—প্রতীকী চিত্র।
বিরোধী থাকার সময়ে তাদের বিরুদ্ধে শিল্প ‘তাড়ানো’র অভিযোগ মুছতে রাজ্যে পালাবদলের পরে বার বার শিল্প মহলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। বন্ধ-ধর্মঘটে দাঁড়ি টানার পাশাপাশি লগ্নি আনতে পরিকাঠামো এবং সহজে ব্যবসার পরিবেশ গড়ারও দাবি করেছে। শুক্রবার মার্চেন্টস চেম্বারের (এমসিসি) বার্ষিক সভায় এসে রাজ্যের তিন মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনা তুলে ধরে ফের বার্তা দিলেন শিল্পকে। অর্থ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বললেন, শিল্পে কারও অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু তা হোক গঠনমূলক। অতীতের ভাবমূর্তির সমস্যার সঙ্গে বর্তমান সরকারের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজার দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে যে সব বার্তা ছড়ানো হচ্ছে তা সরিয়ে রেখে লগ্নি নিয়ে রাজ্যকে ব্যস্ত রাখুক শিল্প মহল। পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক ধরে শিল্পের পরিবেশ না থাকার জন্য আগের জমানাকেই দায়ী করলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
এ দিন এমসিসি-র ১২২ তম বার্ষিক সভায় বণিকসভাটির প্রেসিডেন্ট নমিত বাজোরিয়া রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পনীতির প্রশংসা করলেও তাঁর মতে, আরও কিছুটা স্বচ্ছতা থাকলে তা লগ্নিকে আকর্ষণ করবে। তিন মন্ত্রী অবশ্য গত এক দশকে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্যের পরিস্থিতি আমূল বদলের দাবি করে সরকারের তরফে লগ্নিকারীদের ফের সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। চন্দ্রিমা বলেছেন, আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও হাত বাড়াতে তৈরি তাঁরা।
চন্দ্রিমার দাবি, ভিন্ রাজ্য থেকে এখানে আসা লগ্নিকারীরা কখনও ফিরে যান না। তবে একই সঙ্গে তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা অভিযোগ করবেন। কেন করবেন না? সব সঠিক, কেউ এমন দাবি করে না। কিন্তু গঠনমূলক অভিযোগ করুন। অন্য জায়গা থেকে শুনলে যাচাই করুন। গঠনমূলক পরামর্শ দিতে সঙ্গে আলোচনা করুন। আমরা শুনব। কিন্তু আমাদের পাশে থাকুন। ভুলে যাবেন না।’’
শশীর কথায়, ‘‘কয়েক দশকের ভাবমূর্তির সমস্যার সঙ্গে আলাদা ভাবে লড়ছি। এখন ভাবমূর্তি নিয়ে যা রটানো হচ্ছে, সেগুলি যেন আপনাদের ভাবনা ও লগ্নির সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত না করে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনায় এখন শিল্প সহায়ক নীতি ও পরিবেশ তৈরি হয়েছে রাজ্যে।’’ তবে শিল্পের জন্য রাজ্য সরকারের জমি অধিগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় তাঁরা।
তাঁদের আমলে কোনও শ্রমদিবস নষ্ট না হওয়ার কথা মনে করিয়ে শোভনদেববাবু বলেন, ‘‘গত ৮-১০ বছরে রাজ্যের পরিস্থিতি বদলেছে।’’
তা হলে ভাবমূর্তির সমস্যা এখনও কেন তাড়া করছে রাজ্যকে? জবাবে পরে শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য, শিল্পে জঙ্গি আন্দোলন-সহ অতীতের সমস্যা লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে গত ১১ বছরে পুরোটাই বদলেছে। একই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বার বার স্থায়ী সরকার গঠন ও নানা পদক্ষেপ ভাবমূর্তির সমস্যাকে ধীরে ধীরে মুছে দেবে।