কিছুটা স্বস্তি। সেই সঙ্গে বেশ খানিকটা উদ্বেগ। ফাইল ছবি
কিছুটা স্বস্তি। সেই সঙ্গে বেশ খানিকটা উদ্বেগ। শুক্রবার কেন্দ্রের প্রকাশিত মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পবৃদ্ধি এবং আমদানি-রফতানির পরিসংখ্যানে চোখ রেখে এমনই প্রতিক্রিয়া সংশ্লিষ্ট মহলে। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কমে জুলাইয়ে ৬.৭১% হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা সাত মাস হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া সহনসীমার (৬%) উপরে। আনাজ এবং ভোজ্যতেলের দাম কমেছে কিছুটা। সার্বিক ভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও একটু মাথা নামিয়ে হয়েছে ৬.৭৫%। যা জুনে ছিল ৭.৭৫%। কিন্তু সেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে এখনও স্বস্তিদায়ক নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
জুনে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির ১২.৩% হার অনেকখানি নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো। তবে তা মে মাসের ১৯.৬ শতাংশের তুলনায় বেশ কম। সরকারি মহলের দাবি, এত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থনীতি যে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, সেটা স্পষ্ট টানা দু’মাস এই হার ১০ শতাংশের উপরে থাকায়। কল-কারখানা, বিদ্যুৎ, খনন, ভোগ্যপণ্য-সহ সব ক্ষেত্রে উৎপাদন বেড়েছে। তবে দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে রেকর্ড বাণিজ্য ঘাটতি। জুলাইয়ে রফতানি আগের বছরের তুলনায় ২.১৪% বেড়ে ৩৬২৭ কোটি ডলার হলেও, আমদানি বেড়েছে আরও বেশি, ৪৩.৬১%। হয়েছে ৬৬২৭ কোটি ডলার। ফলে ৩০০০ কোটি ডলার ছুঁয়ে রেকর্ড অঙ্কে ঘাটতি।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ মহানন্দা কাঞ্জিলাল বলেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধি আর্থিক বৃদ্ধির পথে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তার উপরে প্রায় তিন গুণ বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। যা টাকার দামে ফের চাপ তৈরি করতে পারে। ডলারের দাম বাড়লে আমদানি খরচ আরও বাড়বে।
অস্বস্তিতে রাখছে বিশ্ব বাজারও। কারণ, এপ্রিল-জুনে ব্রিটেনে জিডিপি-র সঙ্কোচন এবং ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের বছর শেষে মন্দার ইঙ্গিত। পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো উন্নত দেশে মন্দার ভ্রূকুটি দেশের বাণিজ্য ঘাটতিকে বাড়িয়ে দিতে পারে। মন্দা বিশ্বে চাহিদা কমালে ধাক্কা খেতে পারে ভারতের রফতানি। বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে পারে। তখন কমতে পারে টাকার দাম। ভারতের তেল কেনার খরচ বাড়লে তা উল্টে মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাবে।