দেশ জোড়া আর্থিক সঙ্কট থেকে রেহাই পেল না রেলও। ঝিমিয়ে থাকা চাহিদার জেরে কাহিল অর্থনীতির ছাপ স্পষ্ট হল তাদের রোজগারে। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে কেন্দ্রের উদ্বেগ বাড়িয়ে কমল রেলের আয়।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি তথ্য জানার অধিকার আইনে এক সমাজকর্মীর প্রশ্নের উত্তরে রেল জানিয়েছে, যাত্রী পরিবহণ থেকে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে আয় ছিল ১৩,৩৯৮ কোটি টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৩,২৪৩ কোটি। পণ্য পরিবহণ খাতে রোজগারও ২৯,০৬৬ কোটি থেকে নেমেছে ২৫,১৬৫ কোটিতে। আর্থিক সঙ্কট যে মানুষের বেড়াতে যাওয়ার খরচে থাবা বসিয়েছে, তা পরিষ্কার দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট বিক্রি কমায়। এমনকি শহরতলির ট্রেনেও যাত্রী ভাড়া থেকে আয় কমেছে ১.১৩%।
শঙ্কিত রেল পর্ষদ মাসখানেক আগেই সবক’টি জোনকে চিঠি পাঠিয়ে আয় বাড়াতে ও খরচ কমাতে তৎপর হতে বলেছে। নির্দেশ, যাত্রী ভাড়া ও পণ্য পরিবহণ ছাড়াও আয় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে বিজ্ঞাপনের মতো বিভিন্ন খাতে। আর খরচ ছাঁটতে হবে সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রেই। প্রসঙ্গত, গত অর্থবর্ষেও আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হিমশিম খেয়েছেন রেল কর্তারা। অর্থবর্ষের শেষ দিনে কার্যত কোনও বিলের টাকা মেটানো হয়নি। পাশপাশি প্রধান পণ্য পরিবহণকারী একাধিক সংস্থার থেকে ভাড়া বাবদ প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকা অগ্রিম আদায় করেছিল রেল। কর্তাদের একাংশের ধারণা, তারও প্রভাব এ বার সেই বাবদ আয়ে পড়ে থাকতে পারে।
ম্লান ছবি
• যাত্রী পরিবহণ খাতে রেলের আয় কমেছে প্রায় ১৫৫ কোটি টাকা।
• ৩,৯০০ কোটি আয় কমেছে পণ্য পরিবহণে।
• শহরতলির ট্রেনে যাত্রী ভাড়া থেকে ১.১৩% রোজগার কম হয়েছে।
• দূরপাল্লার সংরক্ষিত শ্রেণিতে টিকিট বিক্রি কমেছে ১.২৭%।
• দেশে শিল্পোৎপাদন ধাক্কা খাওয়ায় ঝিমিয়ে কন্টেনার ও ওয়াগন ভাড়ার প্রবণতা।
• অবস্থা সামলাতে সম্ভাব্য সব খাতে খরচ কমাতে বলেছে রেলের পর্ষদ।
দেশে চাহিদা কমার জেরে সম্প্রতি ধাক্কা খেয়েছে শিল্পোৎপাদন। কল-কারখানায় উৎপাদন কমেছে। সূত্রের দাবি, এর আঁচ বইতে হচ্ছে রেলকেও। কন্টেনার ও ওয়াগন ভাড়া করার প্রবণতা কমেছে সেখানে। যদিও রেল কর্তাদের অনেকে বলছেন, আয়ের এই ওঠাপড়া নতুন নয়। সব জোন তৎপর হলে ঘাটতি পূরণ সম্ভব।