রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
সাধারণ মানুষের মজুরি, ক্রয়ক্ষমতা এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই আক্রমণ শানিয়ে আসছে বিরোধীরা। আজ তাকে আরও এক ধাপ চড়িয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের সতর্কবার্তা, ভারতীয় অর্থনীতি এখন চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতা এবং কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে। আর্থিক অসাম্যের জেরে ধাক্কা খাচ্ছে চাহিদা। এ ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা না হলে আগামী দিনে আর্থিক বৃদ্ধি থমকে যাবে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) ভারতের জিডিপি ৭.২% হারে বাড়তে পারে। কিন্তু আর্থিক বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অর্থনীতির বেশ কিছু অংশকে ঘিরে উদ্বেগ স্পষ্ট হচ্ছে খোদ সরকারি রিপোর্টে। যেমন, ২০২৪ সালের আর্থিক সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, অতিমারি পরবর্তী সময়ে শিল্প সংস্থাগুলির যন্ত্রপাতি কেনার হার আগের তুলনায় কমেছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে তাদের লগ্নি ও সম্প্রসারণ পরিকল্পনা ঘিরে। সমালোচকদের ব্যাখ্যা, বাজারে পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা বৃদ্ধির হার ইতিবাচক জায়গায় না থাকারই প্রতিফলন ঘটছে সংস্থাগুলির কর্মকাণ্ডে।
এই প্রেক্ষিতে রমেশের বক্তব্য, গত তিন দশক চাহিদার উপরে ভিত্তি করে ভারতীয় অর্থনীতি গতি বাড়িয়েছে। দারিদ্রসীমার উপরে উঠে মধ্যবিত্ত হয়েছে বহু পরিবার। তার ফলে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু গত ১০ বছরে প্রবণতা এর ঠিক উল্টো। মজুরি থমকে যাওয়া, চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং অসাম্য বৃদ্ধির জেরে মধ্যবিত্তের হার কমছে। তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে শিল্পে।
আজ এক বিবৃতিতে রমেশ বলেছেন, ‘‘পণ্য ও পরিষেবার খরচ মাত্রাছাড়া হওয়ায় মানুষের কেনাকাটার ক্ষমতা কমেছে।... মজুরি থমকে যাওয়াও এর অন্যতম কারণ।’’ রমেশের আরও অভিযোগ, মোদী সরকারের আমলে বৃহৎ শিল্প সংস্থাগুলির একচেটিয়া ক্ষমতা বেড়েছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য বলেছিলেন, গত পাঁচ বছরে আদানি গোষ্ঠী-সহ পাঁচটি শিল্প গোষ্ঠী অন্তত ৪০টি ক্ষেত্রে একচেটিয়ে ক্ষমতা তৈরি করেছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন রমেশ। বলেছেন, ‘‘দেশের সমস্ত অঞ্চলে অসাম্য বেড়েছে। পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, নরেন্দ্র মোদীর কোটিপতি রাজে অসাম্য ব্রিটিশ রাজের থেকেও বেশি।’’