খাদের মুখে অর্থনীতি! প্রমাদ গুনছে শিল্প

ভারত চেম্বারের সভাপতি সীতারাম শর্মার আশঙ্কা, কেন্দ্র ব্যবস্থা না-নিলে দেশকে মন্দার হাত থেকে বাঁচানো কঠিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০০
Share:

শিল্প মহলের অনেকে বলছেন, কেন্দ্র যতই পরিস্থিতি আয়ত্তে থাকার দাবি করুক, কার্যত খাদের মুখে অর্থনীতি।

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি আরও ধাক্কা খেতে চলেছে আন্দাজ করে শুক্রবারের শেয়ার বাজার নেমেছিল আগেই। সেনসেক্স ৩৩৬.৩৬ পড়ে দাঁড়ায় ৪০,৭৯৩.৮১ অঙ্কে। পরে পরিসংখ্যান বেরোতে দেখা গেল, তা হয়েছে ৪.৫%। বাজার বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রথম ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধি ৫% হওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠেছিল এই সঙ্কট মন্দার রূপ নেবে না তো? এ বার তা ৪.৫% ছোঁয়ায় সেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

Advertisement

শিল্প মহলের অনেকে বলছেন, কেন্দ্র যতই পরিস্থিতি আয়ত্তে থাকার দাবি করুক, কার্যত খাদের মুখে অর্থনীতি। তাদের প্রশ্ন, আর কত নামবে বৃদ্ধি? কারখানায় যে উৎপাদন বাড়ছে না, তা স্পষ্ট। তা হলে কী করে চাকরি হবে! কী করে চাহিদা বাড়বে? চাহিদা

না-বাড়লে লগ্নি করবে কেন সংস্থা? স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার মতে, ভয়ের ব্যাপার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু বর্তমান বাজার দরের নিরিখে হিসেব করা বৃদ্ধি ১৯৬৮-৬৯ অর্থবর্ষের পরে সর্বনিম্ন, ৬.১%। তাদের মতে, এই পরিস্থিতি অস্বাভাবিক। তার মানে কর আদায়, চাহিদা কোনওটাই বাড়ছে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক হচ্ছে গয়নায় হলমার্কিং

বাড়ছে উদ্বেগ

• টানা তিনটি ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ৬ শতাংশের নীচে।
• ছ’বছরের বেশি সময়ে বৃদ্ধি সবচেয়ে শ্লথ। এর আগে ২০১২-১৩ সালের জানুয়ারি-মার্চে তা হয়েছি ৪.৩%।
• কারখানায় উৎপাদন, চাহিদা ও লগ্নিতে ধাক্কা যার প্রধান কারণ।
• অক্টোবরেও আটটি প্রধান পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উৎপাদন কমেছে ৫.৮%। ২০০৫ সালের পরে সব চেয়ে বেশি। এই নিয়ে টানা তিন মাস তা সঙ্কুচিত।
• অক্টোবরে রাজকোষ ঘাটতি পৌঁছে গিয়েছে চলতি অর্থবর্ষে বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ১০২.৪ শতাংশে।

শিল্পের আশঙ্কা ও প্রশ্ন

• কেন্দ্রের পদক্ষেপে কাজ হয়নি।
• অর্থমন্ত্রী যা-ই বলুন না কেন, অর্থনীতি কার্যত মন্দার মুখেই।
• চাহিদা না-বাড়লে বৃদ্ধির চাকায় গতি ফিরবে কী করে? লগ্নিই বা বাড়ানো হবে কেন?
• কী করে বাড়বে কর্মসংস্থান?
• সারা বিশ্বের অর্থনীতিই সঙ্কটে। ভারতেও তার ছাপ স্পষ্ট।
• দু’বছরেও অবস্থা বদল কঠিন।

ভারত চেম্বারের সভাপতি সীতারাম শর্মার আশঙ্কা, কেন্দ্র ব্যবস্থা না-নিলে দেশকে মন্দার হাত থেকে বাঁচানো কঠিন। তাঁর দাবি, ‘‘আর্থিক হাল ফেরানোর কোনও ব্যবস্থাই ফল দেয়নি। চাহিদা বাড়ানোর ব্যবস্থা চাই।’’ অনেকেরই আশঙ্কা, বৃদ্ধির হার আর যদি না-ও কমে, তবু বছর দুয়েকের মধ্যে তার মাথা তোলার সম্ভাবনা কম।

অ্যাসোচেম কর্তা দীপক সুদ-সহ শিল্পের একাংশের অবশ্য মত, বৃদ্ধির হার আর নামবে না। দেকো সিকিউরিটিজ়ের প্রধান অজিত দে- ও বলেন, ‘‘অন্য দেশের থেকে ভারতের হার ভাল।’’ তবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখের দাবি, ‘‘দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে।’’ লগ্নিকারীদের আশঙ্কা, সোমবার আরও পড়বে সূচক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement