কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।
কোভিডে সব চেয়ে আগে ধাক্কা খেয়েছিল পর্যটন ব্যবসা। তাই বাজেটে তাদের জন্য কোনও সুবিধা ঘোষণা হয় কি না, সেটা নিয়ে আগ্রহ ছিলই। দেখা গেল, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পর্যটনের কথা গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করলেন বটে। তবে মোটের উপরে স্বল্প মেয়াদে লাভ-ক্ষতির নিরিখে খুব সন্তুষ্ট হতে পারল না এই ক্ষেত্রের সংগঠনগুলি। নির্মলা পর্যটনকে কাজ এবং নতুন উদ্যোগ তৈরির লক্ষ্যে এগোনোর কথা বললেও, তাতে ভিজছে না চিঁড়ে। যদিও দার্জিলিঙের সাংসদ তথা বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘সীমান্ত পর্যটনে পাহাড়, তরাই বা ডুয়ার্সে কাজ হবে। ৫০টি গন্তব্যের মধ্যে আমাদের এলাকা থাকতে পারে বলে আশা করছি।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্ত পর্যটন, দেশের ৫০টি বিশেষ গন্তব্য, জেলাভিত্তিক গন্তব্য, পর্যটন প্রচারের কথা বলা হলেও, সবই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বলে মনে হচ্ছে। করোনায় বিধ্বস্ত এই ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে সরাসরি আর্থিক সুবিধা, কর ছাড়, ভর্তুকির কথা বলা হয়নি। পর্যটনকে পুরোদস্তুর শিল্পের মর্যাদা দেওয়ার দাবি উঠলেও, প্রস্তাবে তার উল্লেখ নেই।
সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, উল্টে যে সব সংস্থা ভারত থেকে বিদেশে পর্যটক পাঠায়, তাদের উৎসে কর ৫% থেকে বেড়ে ২০% হয়েছে। তা না কমালে অনেকের ঝাঁপ বন্ধ হবে। বহু ক্ষেত্রে ভ্রমণ ‘প্যাকেজ’ তৈরির সময়ে একাধিক বার জিএসটি চাপে। তার সরলীকরণ জরুরি। বিদেশি মুদ্রার আয়েও তাঁরা জিএসটি ছাড়ের দাবি করেছিলেন। শিল্পের তকমা পেলে কম সুদে ঋণ-সহ আরও সুবিধা মিলত।
ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব টুর অপারেটর-এর প্রেসিডেন্ট রাজীব মেহরা এবং ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ সরকারের বক্তব্য, নির্মলা পর্যটন সহায়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের বার্তা দিলেও কিছু জরুরি বিষয় গুরুত্ব না পাওয়ায় হতাশ তাঁরা। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক-এর সচিব সম্রাট সান্যালের মতে, প্রস্তাব তৃণমূলস্তরে বাস্তবায়িত হওয়ার নিশ্চয়তাও জরুরি। ঝাড়গ্রাম জেলা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন কর্মকারের দাবি, ‘‘কোন জেলায় কী করা হবে, সে তথ্য নেই। জঙ্গলমহলের ব্যবসায়ীরা অনেকেই আশাহত।’’
তবে পুরুলিয়া হোটেল অ্যান্ড লজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর মুখপাত্র মোহিত লাটা, দিঘা-শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের সহ-সভাপতি গিরীশচন্দ্র রাউতের দাবি, পর্যটনে যে অর্থ বরাদ্দ হবে, তার একাংশ পেলে তাঁরাও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।