প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। ফাইল ছবি।
বাজেটে আয়করের নতুন কাঠামোয় ছাড়ের অঙ্ক বাড়িয়ে তাকে আরও আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ থেকে সেটিই প্রধান কাঠামো হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের আক্ষেপ, দুই কাঠামো সংক্রান্ত ‘হট্টগোলে’ চাপা পড়ে যাচ্ছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের গুরুত্ব। অতিধনীদের করের হার কমানোর সমালোচনা করেছে আরএসএসের অর্থনৈতিক শাখা স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ।
২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেটে নতুন আয়কর কাঠামোর প্রস্তাব করেছিলেন নির্মলা। যেখানে সঞ্চয়, লগ্নি, গৃহঋণ, বিমার মতো খরচে আয়কর বাঁচানোর সুবিধা নেই। তবে করবিহীন আয়ের স্তর কিছুটা বেশি। আয়কর বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিভিন্ন ছাড় সরিয়ে দিয়ে কেন্দ্র সরলতর কর কাঠামো তৈরি করতে চাইলেও, নিট সুবিধা পুরনো ব্যবস্থার তুলনায় কম ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে তাকে ঢেলে সাজিয়েছেন নির্মলা। এ দিন কেন্দ্রীয় রাজস্বসচিব সঞ্জয় মলহোত্রের ইঙ্গিত, ধীরে ধীরে পুরোপুরি নতুন কাঠামোয় সরে আসতে পারে কেন্দ্র।
চিদম্বরমের অবশ্য বক্তব্য, নতুন কর কাঠামোর ‘রহস্য’ উন্মোচিত হচ্ছে। প্রথম সারির সংবাদপত্রে প্রকাশিত সারণি ও ব্যাখ্যায় চোখ বোলালে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তাঁর টুইট, ‘‘আপনি যদি করদাতা হন, তা হলে এখনই সিদ্ধান্তে চলে আসবেন না। হিসাব কষুন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সঙ্গে আলোচনা করুন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমার আক্ষেপ, পুরনো এবং নতুন কর কাঠামো নিয়ে হট্টগোলে উন্নয়নশীল দেশে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের গুরুত্ব চাপা পড়ে যাচ্ছে।... বিপুল অংশের মানুষ রাষ্ট্রের সুরক্ষাব্যবস্থার আওতায় না থাকায় ব্যক্তিগত সঞ্চয়ই একমাত্র সামাজিক সুরক্ষা।’’
আয়করের নতুন ব্যবস্থায় উঁচু আয়ের রোজগেরেদের করের হার ৪২.৭৪% থেকে কমিয়ে ৩৯% করারও প্রস্তাব করেছেন নির্মলা। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের সহ-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজনের অবশ্য বক্তব্য, ভারতে করের হার উঁচু বলে দাবি করে অতিধনীদের অনেকে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। এই প্রবণতার আটকানোর জন্য সরকার তাঁদের করে কিছু সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মহাজনের কথায়, ‘‘আমি অর্থমন্ত্রী হলে প্রধানমন্ত্রীকে বলতাম, অতি ধনীদের দেশ ছাড়া বন্ধ করতে। তার পর যেন পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। আর করের জন্য যাঁরা ছেড়েছেন তাঁদের ফেরার রাস্তা স্থায়ী ভাবে বন্ধ করা হোক। এই ধরনের লোকেদের দেশের অগ্রগতির প্রক্রিয়ার শরিক করা যায় না।’’