বুধবার বাজেটে প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবার পরিসর আরও বাড়ানোর কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রতীকী ছবি।
ভারতকে ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা বহু দিন ধরেই বলছে কেন্দ্র। সে জন্য জোর দিচ্ছে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে। সেই লক্ষ্যে এগোতে বুধবার বাজেটে প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবার পরিসর আরও বাড়ানোর কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ঘোষণা করলেন, কৃত্রিম মেধার (আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্স) উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়া, জাতীয় তথ্য পরিচালন নীতি আনা এবং সংস্থার ডিজি লকার তৈরির কথা। দেশের প্রান্তিক অঞ্চলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্যের প্রসারে প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবাকে যুক্ত করার ডাক দিলেন।
জি-২০ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এসে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে ইউপিআই-এর মতো ডিজিটাল প্রযুক্তিকে বিভিন্ন দেশে ছড়ানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছে মোদী সরকার। তার আগে করোনাকালে এসেছে কো-উইন অ্যাপ। যার সাহায্যে টিকার তথ্য মেলে। এ বার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং শহরে প্রযুক্তি পরিবেশ গড়ে তুলতে বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের সংস্থার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করা হবে। দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে তৈরি করা হবে স্কিল ইন্ডিয়া ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এ সবের হাত ধরে শিল্পের চাহিদা বুঝে দক্ষ কর্মী তৈরি, ছোট শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে কর্মীদের পরিচয় করানো, উদ্যোগপতিদের জন্য আনা প্রকল্প সম্পর্কে জানানো সহজ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
পাশাপাশি, দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম মেধার তিনটি উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। বলেছেন, বিভিন্ন ভাষা, বিষয় এবং শ্রেণির বই বাচ্চাদের কাছে পৌঁছে দিতে জাতীয় ডিজিটাল পাঠাগার গড়ে তোলার কথাও। আবার ৫জি প্রযুক্তি নির্ভর অ্যাপ তৈরির জন্য এঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০০টি গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। এগুলির মধ্যে থাকবে স্মার্ট ক্লাসরুম, পরিবহণ, স্বাস্থ্য এবং কৃষি সংক্রান্ত অ্যাপ।
সেই সঙ্গে কৃষির জন্য প্রযুক্তি নির্ভর পরিকাঠামো গড়ার লক্ষ্যও স্থির করেছে মোদী সরকার। কেন্দ্র চায়, এটি যাতে যে কেউ যে কোনও সময়ে ব্যবহার করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। এর সাহায্যে কোন সময়ে কোন শস্য বোনা যাবে, তার ঋণ ও বিমা, কত ফসল উৎপন্ন হতে পারে সেই সবের আন্দাজ পাওয়া যাবে। জোর দেওয়া যাবে পণ্য বিপণনে। সুবিধা হবে কৃষি-প্রযুক্তি শিল্প ও স্টার্ট-আপগুলির।
শুধু তা-ই নয়। তথ্য সুরক্ষা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই জাতীয় তথ্য পরিচালনা নীতি তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন নির্মলা। বলেছেন, এতে কোনও ব্যক্তির নাম ব্যবহার না-করে তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা হবে। বাড়ানো হবে ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডিজি লকারের পরিসর। আর ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে একাধিক বার যাতে নথি জমা দেওয়ার ঝামেলা এড়ানো যায়, সেই পথ প্রশস্ত করার চেষ্টাও করেছেন তিনি। এ জন্য ছোট-বড় সংস্থা, দাতব্য ট্রাস্টের জন্য চালু হবে ডিজি লকার ব্যবস্থা। লক্ষ্য, নেটেই যাতে তথ্য জমা রাখা নিশ্চিত করা। যা ব্যাঙ্ক, নিয়ন্ত্রক এবং অন্যেরা ব্যবহার করতে পারবে।