প্রতীকী ছবি।
প্যাংগং লেক থেকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফিরতেই এ বার চিনা বিনিয়োগে ছাড়পত্রে নজর ভারতের। ভারতীয় বিদেশ ও বাণিজ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, চিনা সংস্থা গ্রেট ওয়াল মোটর এবং এসএআইসি মোটর কর্পোরেশনের ৪৫টি বিনিয়োগে ছাড়পত্র দিতে চলেছে নয়াদিল্লি। তবে আপাতত উৎপাদন ক্ষেত্রেই বিনিয়োগে ছাড়পত্র দিতে চাইছে ভারত। কারণ, তাতে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বা তথ্য চুরির সম্ভাবনা খুবই কম।
পূর্ব লাদাখের প্যাংগং উপত্যকা-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনার আগ্রাসনের জেরে ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় রক্ষক্ষয়ী সেনা সংঘর্ষ ঘটে। তার জেরে নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছয়। চিনের কয়েকশো অ্যাপ ভারতে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। একই সঙ্গে সম্ভাব্য ১৫০ চিনা বিনিয়োগের প্রস্তাব থমকে যায়। এই বিনিয়োগগুলির মোট মূল্য ছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার। তবে সম্প্রতি প্যাংগং লেক থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে চিন। আপাতত দু’দেশের চুক্তি অনুযায়ী স্থিতাবস্থা ফিরেছে এলএসি-তে।
সীমান্তের অস্থিরতা কাটতেই এ বার বিনিয়োগের প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেননি। তবে দু’টি সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, উৎপাদন ক্ষেত্রে ৪৫টি বিনিয়োগ প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিতে চলেছে। অন্য একটি সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গ্রেট ওয়াল এবং এসএআইসি-র প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখছে। অন্য দিকে ওই দুই সংস্থাও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি।
মূলত ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরি করে গ্রেট ওয়াল। গত বছর মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা জেনারেল মোটরস এবং গ্রেট ওয়াল যৌথ প্রস্তাব দিয়ে জানিয়েছিল, ভারতে জেনারেল মোটরসের গাড়ি তৈরির কারখানা কিনতে চায় গ্রেট ওয়াল। ২৫০ থেকে ৩০০ কোটির ওই চুক্তিতেও এখনও পর্যন্ত ছাড়পত্র দেয়নি এই সংক্রান্ত বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠী। পাশাপাশি গ্রেট ওয়াল আগেই জানিয়েছিল, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়াতে ভারতে আগামী কয়েক বছরে মোট ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। এই বছর থেকেই ভারতে গাড়ি বিক্রি এবং ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির প্রকল্প শুরু করার কথাও জানিয়েছিল গ্রেট ওয়াল।
অন্য দিকে এসএআইসি ২০১৯ সাল থেকে ভারতে তাঁদের ব্রিটিশ ব্র্যান্ড এমজি মোটরস-এর গাড়ি বিক্রি করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এই সংস্থা ভারতে বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৪০ কোটি ডলার। ভারতে ৬৫ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। এই দুই সংস্থার বিনিয়োগে ভারত ছাড়পত্র দিলে দেশের গাড়ি উৎপাদন শিল্পে বড়সড় বিনিয়োগ হবে।