—প্রতীকী চিত্র।
আমদানি খরচের উপরে টাকার দামের দোলাচলের প্রভাব কমাতে ২০২২ সালের জুলাইয়ে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য চালানোর পথ খুলে দিয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে গত অর্থবর্ষে তেলের ক্ষেত্রে সেই সুবিধা কোনও দেশই নেয়নি বলে সম্প্রতি জানিয়েছে খোদ সংসীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট। সরকারি মহলের অবশ্য দাবি, চলতি অর্থবর্ষে এ জন্য প্রথম সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সঙ্গে চুক্তি করেছে ভারত। রাশিয়ার কিছু সংস্থার সঙ্গেও লেনদেন হয়েছে টাকায়। আশা, আগামী দিনে আরও দেশের সঙ্গে হবে। যার হাত ধরে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া যাবে ভারতীয় মুদ্রাকে।
চাহিদার ৮৫% তেল আমদানি করতে হওয়ায় ভারতের এই খরচের বিপুল অংশ যায় জ্বালানি খাতে। সাধারণত এই লেনদেন হয় ডলারে। ফলে তেলের দামে ওঠাপড়ার পাশাপাশি টাকার বিনিময়মূল্যের প্রভাবও পড়ে আমদানি খরচের উপরে। আছে রাশিয়া, ভেনেজ়ুয়েলা, ইরানের মতো তেল রফতানিকারী দেশে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রভাবও। এই সব কিছু কাটিয়ে উঠতেই টাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। পাশাপাশি, কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলের বদলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তেল কেনা, কম দামে তা দেশে আনার ব্যবস্থা করা, নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে আমদানির মতো পথে হাঁটছে ভারত।
ওই সরকারি কর্তা জানান, এ বছর জুলাইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সঙ্গে টাকায় তেল কেনার জন্য চুক্তি করে ভারত। তার পরেই ইন্ডিয়ান অয়েল কয়েক লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল কিনতে ভারতীয় মুদ্রায় আবু ধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানিকে টাকা মেটায়। একই ভাবে রাশিয়ার কিছু রফতানিকারীদের অর্থ মেটানো হয়।
তিনি বলেন, আগামী দিনেও এই ধরনের আরও চুক্তি হবে বলে আশা। তবে সেই প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়া সম্ভব নয়। তাই তাড়াহুড়ো করা হবে না। বরং এতে যাতে খরচ না বাড়ে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ধাক্কা না লাগে, সেটা আগে নিশ্চিত করা হবে। কারণ, কম অর্থের বরাতের ক্ষেত্রে সমস্যা কম। কিন্তু যেখানে লক্ষ লক্ষ ডলারের অশোধিত তেল লেনদেন হচ্ছে, তা সমস্যা তৈরি করতে পারে। ফলে ভূ-রাজনৈতিক বিষয় মাথায় রেখে সতর্ক হয়ে এগোতে চায় ভারত।
সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট বলেছে, গত অর্থবর্ষে টাকায় লেনদেনে এগিয়ে আসেনি কোনও তেল রফতানিকারী দেশই। সরকারি মহলের দাবি, এটা ২০২২-২৩ সালের জন্য সত্যি হলেও এ বছর চুক্তি হয়েছে।