India

India: তেল প্রশ্নে স্পষ্ট জবাব ভারতের

ভারত-আমেরিকা বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের টু প্লাস টু বৈঠকের পরে প্রশ্ন ওঠে রাশিয়া থেকে ভারতের অশোধিত তেল কেনা নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ইউরোপ এক সন্ধ্যায় যতটা অশোধিত তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে, গোটা মাসে ভারত করে তার থেকে কম। ওয়াশিংটনের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে পশ্চিমের সমালোচনার এই ঝাঁঝালো উত্তর দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

Advertisement

ভারত-আমেরিকা বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের টু প্লাস টু বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্ন ওঠে রাশিয়া থেকে ভারতের অশোধিত তেল কেনা নিয়ে। আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এবং দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে সঙ্গে নিয়ে সেখানেই জয়শঙ্কর বলেন, “আপনারা রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা নিয়ে আগ্রহী হলে, আমার পরামর্শ, ইউরোপের দিকেও নজর দেওয়া উচিত। আমরা অবশ্যই কিছুটা কিনি, সেটা জ্বালানির নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু ইউরোপ এক বিকেলে যে পরিমাণ তেল আমদানি করে, আমরা গোটা মাসেও তা করি না।” তিনি এটাও জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং দেশের সংসদ মিলিয়ে ভারতের দেওয়া বিবৃতিগুলিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এ দেশ যুদ্ধের বিপক্ষে, আলোচনা ও কূটনীতির পক্ষে। তারা চায় দ্রুত হিংসা বন্ধ হোক এবং তার জন্য যা করা প্রয়োজন করতে রাজি।

বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, টু প্লাস টু বৈঠকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রসঙ্গ তোলে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে নরমে-গরমে ভারতকে বোঝানোর চেষ্টা করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠকেও উঠেছে রাশিয়া প্রসঙ্গে ভারতের নরম মনোভাব এবং দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা। মন্ত্রক জানিয়েছে, সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি কোনও দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থির করে নিজেদের জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। ফলে জ্বালানির সুরক্ষা নিশ্চিত করার নীতি নিয়েই চলছে ভারত। তার সঙ্গে যুদ্ধের সম্পর্ক নেই। বরং প্রতিটি মঞ্চে বারবার বিবৃতি দিয়ে হিংসা বন্ধের এবং কূটনীতি ও সংলাপের পথে ফেরার আবেদন করছে। তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছে ইউক্রেনের বুচায় গণ-হত্যাকাণ্ডের।

Advertisement

রাশিয়া-ভারত সম্পর্ক নিয়ে এবং সে দেশ থেকে আমদানির বিষয়ে কুশলী অবস্থান নিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন পেস্কি বলেছেন, “রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই। সেই অর্থে ভারত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেনি। প্রত্যেকটি দেশ পদক্ষেপ করে নিজেদের স্বার্থকে মাথায় রেখে।” ভারত যে মাত্র ১ বা ২ শতাংশ জ্বালানি মস্কো থেকে কেনে, সে কথাও বলেন তিনি। পাশাপাশি মনে করান, সোমবার রাতের বৈঠকে জো বাইডেন মোদীকে রাশিয়া থেকে আমদানি কমাতে পরামর্শ দিয়েছেন।

ব্লিঙ্কেনও নিয়েছেন নরম-গরম পন্থা। বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক এমন এক সময়ে গড়ে উঠেছে, যখন আমেরিকার পক্ষে অংশীদার হওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু সময় বদলেছে। আজ আমরা ভারতের কৌশলগত মিত্র।” তাঁর কথায়, “আমি খেয়াল করেছি রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং ভারতীয় সংসদে ইউক্রেনের হত্যা নিয়ে কঠোর বিবৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। নিরপেক্ষ তদন্তও চেয়েছে। যথেষ্ট মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে ইউক্রেনের মানুষের জন্য।” এরপরই তিনি বলেন, “প্রতিটি দেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভিন্ন। চাহিদাও আলাদা। তবে আমরা আমাদের অংশীদার দেশ এবং জোট শরিকদের অনুরোধ করছি রাশিয়া থেকে আমদানি না বাড়াতে।” তাঁর কথায়, “সব বন্ধু দেশের সঙ্গেই ইউক্রেনে আক্রমণ নিয়ে কথা বলছি। পুতিনের যুদ্ধের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়েও কথা চলছে। সব দেশের, বিশেষত যাদের রাশিয়ার সঙ্গে দর কষকাষি করার মতো প্রভাব রয়েছে, তাদের উচিত যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনের উপর চাপ সৃষ্টি করা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement