নতুন নীতি অনুমোদিত হলেও তাতে নির্মীয়মাণ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কাজে বাধা তৈরি হবে না। প্রতীকী ছবি।
কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার কমাতে চাইছে অধিকাংশ দেশ। একই উদ্দেশ্যে দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির মধ্যে বিকল্প জ্বালানির অংশীদারি বাড়াতে চাইছে ভারত। সূত্রের খবর, দেশে যাতে নতুন করে আর কোনও কয়লাচালিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা না হয় সে ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সরকারের অভ্যন্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন বিদ্যুৎ নীতির খসড়ায় তেমনই সংস্থান রাখা হয়েছে। তার জন্য পূর্ববর্তী খসড়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ ধারা। এর পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
সরকারি সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, নতুন নীতি অনুমোদিত হলেও তাতে নির্মীয়মাণ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কাজে বাধা তৈরি হবে না। ওই সব কেন্দ্রের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হওয়ার কথা ২৮.২ গিগাওয়াট। পুরো বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে যে তিনটি সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, তার মধ্যে এক জনের বক্তব্য, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তাবিত খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, যে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তার বাইরে নতুন করে আর কোনও প্রকল্পের দরকার নেই।’’
এখন সারা বিশ্বে চালু তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে ৮০ শতাংশই রয়েছে চিন এবং ভারতে। এর বাইরে অধিকাংশ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য কয়লার ব্যবহার কমাতে শুরু করে দিয়েছে। অর্থাৎ, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে ভারতের নয়া বিদ্যুৎ নীতি কার্যকর হলে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে একমাত্র চিনেই নতুন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের রাস্তা খোলা থাকবে। তবে সূত্রের বক্তব্য, প্রস্তাবিত নীতিতে ভারতে চালু তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং তার ব্যবহার আর্থিক দিক দিয়ে লাভজনক হয়ে না উঠলে দেশে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হবে না।
এর আগে পর্যন্ত বিশ্ব মঞ্চে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে কয়লার ব্যবহার বন্ধের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছিল ভারত এবং চিন। তারা যুক্তি দিচ্ছিল, তাদের মাথাপিছু নিঃসরণ কম, বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবহারও বাড়ছে। তবে কেন্দ্রের খসড়াকে সেই অবস্থান থেকে কিছুটা হলেও সরে আসা হিসেবেই দেখতে চাইছে সংশ্লিষ্ট মহল।