এখন সুদ ৭.২৫ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, চলতি অর্থবর্ষের শেষে মার্চ নাগাদ তার হার ৭.৫% ছুঁতে পারে। প্রতীকী ছবি।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের ঋণের উপর সুদের বোঝা নিয়ে জেরবার। এ বার ঋণের উপর সুদের বোঝা মোদী সরকারেরও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করবেন। তার অঙ্ক কষতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা দেখছেন, চলতি আর্থিক বছরেই সরকারের রাজস্ব খাতের ব্যয়ের প্রায় ৩০% পুরনো ঋণের সুদ মেটাতে চলে যাবে। আগামী অর্থবর্ষে তা আরও বাড়বে।
মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, গত ফেব্রুয়ারিতে নির্মলা তাঁর চলতি অর্থবর্ষের (২০২২-২৩) বাজেটে যখন বাজার থেকে ১৪.৩১ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, সেই সময়ই টের পাওয়া গিয়েছিল সুদের হার বাড়বে। কারণ, গত আর্থিক বছরে (২০২১-২২) নেওয়া ১০.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের থেকে তা ছিল অনেকখানি বেশি। ঋণের পরিমাণ এক ধাক্কায় এতটা বেড়ে যাওয়ায় বাজেট পেশের দিনই সরকারি ঋণপত্রে সুদের হার বেড়ে গিয়েছিল। যা নির্ভর করে ১০ বছরের ঋণপত্রে সুদের হারের উপরে। বাজেটের দিন তা ৬.৬৮% থেকে বেড়ে ৬.৮৫ শতাংশে উঠে যায়। এখন সুদ ৭.২৫ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, চলতি অর্থবর্ষের শেষে মার্চ নাগাদ তার হার ৭.৫% ছুঁতে পারে।
সুদের হার বাড়ার ফলে ঋণের উপরে মোট সুদের বোঝাও বাড়ছে। বাজেটের হিসাব বলছে, গত আর্থিক বছরে কেন্দ্রের রাজস্ব খাতে ব্যয়ের প্রায় ২৫% অর্থই সুদ মেটাতে বেরিয়ে গিয়েছিল। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের অনুমান, চলতি বছরে তা ৩০% ছোঁবে। গত বার সুদ খাতে খরচ হয়েছিল ৮.১ লক্ষ কোটি টাকা। এ বার বেড়ে ৯.৪ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে। সুদের বোঝা ইতিমধ্যেই মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র ৩ শতাংশের বেশি।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘চলতি বছরে ঋণের পরিমাণ ১৪.৩১ লক্ষ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১৪.২১ লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। কিন্তু সুদের বোঝা তাতে কমছে না। ফলে কেন্দ্রের কর বাবদ আয়ের অর্ধেকের বেশি তা মেটাতে চলে যাচ্ছে। গত অর্থবর্ষে কর বাবদ আয়ের ৫২ শতাংশের বেশি অর্থ সুদ মেটাতে ব্যয় হয়েছে। চলতি বছর ও আগামী বছরেও এর ব্যতিক্রম হবে না।’’