প্রতীকী ছবি।
বার বার সতর্ক করছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। লেনদেনে কর বসানোর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। অথচ রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, করোনার মধ্যে গত বছরে ৭.৩% দেশবাসীর হাতে ছিল ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিভিন্ন মহলের সতর্কবার্তায় কান না-দিয়েই এতে টাকা ঢেলেছেন এক শ্রেণির লগ্নিকারী। এই অবস্থা চলতে থাকলে তা কিছু মানুষকে বিপুল মুনাফার মুখ দেখালেও, সামাজিক ও আর্থিক দিক থেকে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
রাষ্ট্রপুঞ্জের বাণিজ্য ও উন্নয়ন পর্ষদের রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশবাসীর ক্রিপ্টো হাতে রাখার ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ইউক্রেন (১২.৭%) ও রাশিয়া (১১.৯%)। ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ চলছে যাদের মধ্যে। তার পরে যথাক্রমে ভেনেজ়ুয়েলা (১০.৩%), সিঙ্গাপুর (৯.৪%), কেনিয়া (৮.৫%) ও আমেরিকা (৮.৩%)। ২০টি দেশের তালিকায় ভারতের স্থান সপ্তম। আর এর মধ্যে ১৫টিই উন্নয়নশীল দেশ।
গত অর্থবর্ষে ক্রিপ্টোর এই রমরমা চোখ এড়ায়নি কেন্দ্রের। যে কারণে বাজেটেই একে সম্পদের তকমা দিয়ে তা লেনদেনে কর চাপানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আনা নেটে ব্যবহারের মুদ্রাকেই ডিজিটাল মুদ্রা বলা যাবে। যা বাজারে ছাড়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছে আরবিআই। ক্রিপ্টো নিয়ন্ত্রণে আইন আনা নিয়েও কথা বলছে কেন্দ্র। সম্প্রতি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ওয়াজ়ির-এক্সের বিরুদ্ধে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে তিনটি আলাদা রিপোর্টে ক্রিপ্টো নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এর ব্যবহার বেড়েছে মূলত দ্রুত লেনদেনের সুবিধা থাকায় এবং মুদ্রার দামের পতন ও মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি এড়ানোর মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু তা তৈরি করছে বেশ কিছু আশঙ্কাও। যেমন এতে বাড়তে পারে ক্রিপ্টোর মাধ্যমে কর ফাঁকি, বেআইনি লেনদেন। প্রথাগত মুদ্রায় কমতে পারে নিয়ন্ত্রকের দখল। ক্রিপ্টোর ব্যবহার বিপুল বাড়লে তা আঘাত করতে পারে দেশের আর্থিক সার্বভৌমত্বেও। বিশেষত যে সব দেশে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার তলানিতে নেমেছে, তাদের ক্ষেত্রে স্টেব্লকয়েনের মতো ক্রিপ্টো (যেগুলিতে সম্পদের ভিত্তিতে মুদ্রার দাম ধরা হয়, শুধু চাহিদার উপরে ভিত্তি করে নয়) বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
এই প্রেক্ষিতে মানুষকে ক্রিপ্টোর নানা সুবিধা পৌঁছে দিতে পারে, এমন লেনদেন ব্যবস্থা চালু করা গেলে তার ব্যবহারে রাশ টানা সম্ভব বলে জানাচ্ছে রিপোর্ট। ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ, ডিজিটাল ওয়ালেটগুলি নিয়ন্ত্রণ করা, আর্থিক সংস্থাগুলিতে ক্রিপ্টো লেনদেন নিষিদ্ধ করা, নগদের জোগান বহাল রাখার সওয়াল করেছে তারা। জোর দিয়েছে এর বিজ্ঞাপন বন্ধে, দেশগুলির মধ্যে ক্রিপ্টোয় করের ক্ষেত্রে সমন্বয় আনা, তথ্য আদানপ্রদানেও।