এইচপিসি রাজ্যের ১২টি জেলায় গ্যাস বণ্টনের বরাত পেয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বাড়ি-হোটেল-রেস্তরাঁর রান্না এবং গাড়ি ও শিল্পোৎপাদনের জ্বালানি হিসেবে রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল পাইপলাইন গড়ছে। তাদের থেকে সেই গ্যাস নিয়ে ক্রেতাকে বিক্রি করতে শুরু করেছে হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসি)-সহ রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি একাধিক বণ্টন (সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন) সংস্থা। গেলের পাশাপাশি কলকাতার সেই গ্যাস জোগানের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতায় প্রাকৃতিক গ্যাসের কেন্দ্র গড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। এ বছরের শেষে সেটি চালু হলে আগামী মার্চ থেকে পাইপলাইনে শিল্প ও রান্নার জ্বালানি হিসাবে পিএনজি এবং গাড়ির জ্বালানি হিসেবে সিএনজি বণ্টন শুরুর বিষয়ে সংস্থার কর্তারা আশাবাদী।
জগদীশপুর (উত্তরপ্রদেশ)-হলদিয়া, ধামড়া-হলদিয়া ও বারাউনি-গুয়াহাটি পাইপলাইনের মাধ্যমে রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান দেবে গেল। সেই কাজ চলছে। দক্ষিণবঙ্গের একাংশে আপাতত গেলের থেকে গ্যাস নিয়েই সিএনজি বিক্রি করছে ইন্ডিয়ান অয়েল আদানি গ্যাস, বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি এবং এইচপিসি।
এইচপিসি রাজ্যের ১২টি জেলায় গ্যাস বণ্টনের বরাত পেয়েছে। সংস্থাটির জিএম (সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন) সঞ্জয় ঘোষ জানান, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে সিএনজি এবং পিএনজি উৎপাদনের জন্য তাঁরা ফলতায় দেড় একর জমিতে কেন্দ্রটি গড়ছেন। খরচ হবে প্রায় ২৩ কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ধামড়া থেকে সড়ক পথে আসবে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। আশা, অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রটি চালু হবে। তাঁদের লক্ষ্য আগামী মার্চের মধ্যে কিছু শিল্প সংস্থা এবং পরিবারে (প্রায় ২৫০০) পিএনজি সংযোগ চালু করা। সংলগ্ন এলাকার পাম্পে সিএনজি-র জোগানও শুরু হবে।
শিল্পমহলের মতে, এখন যে সব কারখানায় জ্বালানি হিসাবে রান্নার গ্যাস (এলপিজি) ব্যবহৃত হয়, সেখানে পিএনজি ব্যবহার সম্ভব। ফলতায় এমন কয়েকটি সংস্থার সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছে এইচপিসি। গ্রাহকদের কাছে এই জ্বালানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফলতায় আলাদা পাইপলাইন তৈরি করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। বস্তুত, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই কেন্দ্র থেকেই বিভিন্ন ধরনের গ্রাহককে গ্যাসের জোগান দেবে সংস্থা।
সিএনজির চাহিদা বাড়াতে সম্প্রতি পাম্প মালিক, গাড়ি সংস্থা, পুরনো গাড়ি সিএনজি-তে বদলের কাজে যুক্ত সংস্থাগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন এইচপিসি কর্তারা। সিএনজি গাড়ি কিনলে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক কিছু আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রকল্পের পরিকল্পনাও করছে সংস্থাটি। সংস্থা সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গের একাংশে ১৬টি সিএনজি স্টেশন চালু করেছে তারা। ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২২টি, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও মালদহে ২১টি এবং উত্তর দিনাজপুর, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে ১৫টি নতুন স্টেশন চালু করতে চায় তারা।