প্রতীকী ছবি।
আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধির ধাক্কা ভারতে বহাল রইল শুক্রবারও। এ দিন টাকার দামের পাশাপাশি ধসের মুখে পড়ল শেয়ার বাজার। এক দিকে, রেকর্ড তলানিতে ঠেকল ভারতীয় মুদ্রা। এই প্রথম ৮১ পেরোল ডলার। ৩০ পয়সা বেড়ে হল ৮১.০৯ টাকা। অন্য দিকে, হাজারের বেশি নামল সেনসেক্স। দিন শেষ করল ৫৮,০৯৮.৯২ অঙ্কে। লগ্নিকারীরা হারালেন ৪.৯০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার সম্পদ।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের দাবি, আমেরিকায় এই দফায় ৭৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বৃদ্ধি মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ডলারের সাপেক্ষে বিশ্বের প্রায় সব দেশের মুদ্রার দামই কমেছে। বরং টাকার অবস্থা তুলনায় ভাল। কিন্তু ভারতে লগ্নিকারীরা এ দিন আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করেন। তার উপরে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির ভারতের শেয়ার থেকে টাকা তুলে আমেরিকার বন্ড ও ডলারে ঢালছে। কারণ, ডলার লগ্নির নিরাপদ মাধ্যম। আর সুদ বৃদ্ধির জেরে সে দেশে বন্ডবাজার চাঙ্গা। তবে তাঁর আশা, ‘‘আরও ডলার ছেড়ে টাকাকে বাঁচাতে চেষ্টা করবে আরবিআই। ফলে তা ৮২ টাকার বেশি হয়তো বাড়বে না। তবে এতেও আমদানি খরচ যেখানে পৌঁছবে, তাতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকছে।’’
বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর অবশ্য মত, ভাঁড়ার থেকে আরও বেশি ডলার বাজারে ছাড়ার আগে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সম্ভবত দু’বার ভাববে। কারণ, ইতিমধ্যেই এতে অনেকটা নগদের জোগান কমেছে। এ দিকে উৎসবের মরসুমে বিভিন্ন জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়ছে। যার জেরে ব্যাঙ্কেও বাড়ছে ঋণের চাহিদা। বাজারে আরবিআই ডলার বেচলে নগদ টাকার জোগান কমবে। আর না বেচলে টাকার দাম আরও পড়বে। তবে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমায় কিছু ডলার সাশ্রয় হবে। যেটা টাকার দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলছেন, এই কারণেই টাকার গতিপথ নিয়ে এখনই মন্তব্য করা কঠিন।
যদিও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সৈকত সিংহ রায়ের ধারণা, ডলার ৮৫ টাকা ছুঁতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকা যতদিন সুদ বাড়াবে, ততদিন ভারত থেকে বিদেশি লগ্নির প্রস্থান জারি থাকতে পারে। টাকার পতন আমদানির খরচ বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতিকে চওড়া করতে পারে। আর আরবিআই পতন রুখতে ডলার ছাড়লে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার দুর্বল হতে পারে।’’