ক্যাপ্টেন জ্যোতি বিস্ত
দেশীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছে ফ্লিপকার্ট। শুধুমাত্র কেনাবেচার জন্য একটি প্ল্যাটফর্মই নয়, তারা বিক্রেতা, দোকানদার, গ্রাহক, অংশীদারদের সঙ্গে মিলে একটি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী তৈরি করেছে। এবং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রত্যেকের জন্য এমন একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে যা তাদের সার্বিক মূল্যবোধ তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য হয়ে উঠেছে। ফ্লিপকার্টের বাজার হিসেবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে গুরুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলকভাবে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সারা দেশজুড়ে তারা প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করে চলেছে। তাদের সরবরাহকারী শৃঙ্খলটি এতটাই শক্তিশালী যে তারা রাজ্যের হাজার হাজার বিক্রেতাকে জাতীয় বাজারের সঙ্গে যুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পাশাপাশি, এই শৃঙ্খলের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করার ক্ষেত্রে ফ্লিপকার্ট নজিরবিহীন ভূমিকা পালন করছে। ফলত বহু বয়স্ক মানুষও এই আধুনিক যুগের সরবারহকারী ব্যবস্থাপনার সঙ্গে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারছেন।
সম্প্রতি ২০২১ সালে ফ্লিপকার্ট তাদের সাল্পাই চেইনস অপারেশন অ্যাকাডেমি (এসসিওএ) চালু করে। এটি একটি ডিজিটাল লার্নিং অ্যাকাডেমি যা প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। সেই সঙ্গে এটি সেই শিক্ষার্থীদের সাপ্লাই চেইন অপারেশনের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণ এবং জ্ঞানও প্রদান করে। এই উদ্যোগের ফলে বাজারে সুদক্ষ মেধার সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে।
এই প্রোগ্রামটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ১৫ দিনের ডিজিটাল ক্লাসরুম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর পরে তাদের ৪৫ দিনের জন্য সংস্থায় শিক্ষানবিশ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই পাঠ্যক্রমটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ই-কমার্স সরবারহ শৃঙ্খলের বিভিন্ন দিক, সেই শৃঙ্খলের সংশ্লিষ্ট ভূমিকা, বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। পাশাপাশি এই পাঠ্যক্রমটি বাজারে দক্ষতার ব্যবধান পূরণ করে, অধিক পরিমাণে কর্মসংস্থান তৈরি করতেও সহায়তা করছে।
পাশাপাশি স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্লিপকার্ট আরও একটি ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। এই প্রোগ্রামটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অত্যাধুনিক সরবরাহকারী শৃঙ্খলে কাজ করার সুযোগ পাবে। এটি একটি ৪৫ দিনের ‘লঞ্চপ্যাড’ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সরবরাহকারী শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সমালোচনামূলক দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি কোনও ই-কমার্স গঠনপ্রক্রিয়াগুলি বুঝতে সক্ষম হবে।
পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে হরিণঘাটা এবং ডানকুনিতে দু’টি প্রধান সরবরাহকারী শৃঙ্খল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এই দুই জায়গাতেই ফ্লিপকার্টের দু’টি বৃহত্তম সরবরাহ শৃঙ্খলের সুবিধা রয়েছে।
সরবারহকারী শৃঙ্খলের প্রধান
ফ্লিপকার্টের এই সরবারহ শৃঙ্খল রাজ্যের নাগরিকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এর মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ নতুন জীবিকার সন্ধান করতে পেরেছেন। স্থানীয় উদ্যোক্তা বাড়ছে। সর্বোপরি গ্রাহকদের একটি উচ্চমানের ই-কমার্স অভিজ্ঞতা প্রদানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
পাশাপাশি, ফ্লিপকার্ট তাদের একাধিক উদ্যোগ এবং নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে সরবরাহ শৃঙ্খলে মহিলাদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করে চলেছে। যা আদতে লিঙ্গ নির্বেশেষে প্রত্যেককে একটি সমান ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে ফ্লিপকার্টের এমনই একজন কর্মচারী হলেন ক্যাপ্টেন জ্যোতি বিস্ত। যিনি ৬ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। ভারতের পতাকা কাঁধে তুলে নেওয়া এই ব্যক্তি বর্তমানে ফ্লিপকার্টের প্রযুক্তি নির্ভর সরবারহকারী শৃঙ্খলের একটি প্রধান অংশ। ক্যাপ্টেন জ্যোতি তার সমস্ত শিক্ষা ফ্লিপকার্টের সর্বভারতীয় সরবরাহকারী শৃঙ্খলের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। এবং অসংখ্য বাঁধার মধ্যেও মসৃণভাবে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করেছেন।
দেশজুড়ে যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মহিলারা সক্রিয়ভাবে ফ্লিপকার্টের সরবারহকারী শৃঙ্খল চালাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ক্যাপ্টেন জ্যোতি। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গে অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। গ্রাহকরা অর্ডার দেওয়ার পরে সেই অর্ডারগুলি প্রসেস করা, প্যাক করা এবং দ্রুততম সময়ে পাঠানো নিশ্চিত করার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
বিশ্বের অন্যতম উচু যুদ্ধক্ষেত্র — কার্গিল, দ্রাস এবং সিয়াচেনের মতো জায়গায় এক জন অভিজ্ঞ সরবারহকারী হিসেবে কাজ করেছেন জ্যোতি। চরম আবহাওয়া এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি সঠিক সময়ে বিভিন্ন সেনা পোস্টে প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করতেন। সেই কারণেই ফ্লিপকার্টের সরবরাহ শৃঙ্খলে বিভিন্ন সমস্যা শনাক্তকরণ এবং মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা চোখে পড়ার মতো।
সরবারহ শৃঙ্খলের আর্মি
ক্যাপ্টেন জ্যোতির মতোই ফ্লিপকার্টে বেশ কয়েক জন প্রাক্তন সামরিক কর্মী রয়েছেন যাঁরা কর্পোরেট অফিসে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে সুষ্ঠুভাবে কার্যপরিচালনার বিষয়গুলির দিকে খেয়াল রাখেন। তাঁদের কারণেই এই সরবারহ শৃঙ্খল কোনও রকম সমস্যা ছাড়াই কাজ করতে পারে।
২০২০-র নভেম্বরে, আর্মি ওয়েলফেয়ার প্লেসমেন্ট অর্গানাইজেশন (AWPO) এর সঙ্গে একটি সংঘবদ্ধভাবে 'ফ্লিপমার্চ'-এর ঘোষণা করেছে। যার উদ্দেশ্য প্রাক্তন সামরিক কর্মীদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তা ফ্লিপকার্টের সঙ্গে একীভূত করা। এই উদ্যোগটি প্রাক্তন সেনা কর্মীদের একটি নতুন কর্মজীবনের পথ খুলে দিয়েছে। তাঁরা সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ, নির্দেশিকা ইত্যাদি একাধিক ভূমিকায় কাজ করতে পারেন। এই উদ্যোগ অভিজ্ঞ সেনাদের দক্ষতা ও ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের কর্পোরেট জগতে পা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কর্মক্ষেত্রকে আরও মসৃণ করে তোলে।
বছরের পর বছর ধরে, ফ্লিপকার্ট বিভিন্ন সরকারী সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বে সারা দেশে হাজার হাজার সরবরাহ শৃঙ্খল কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যা তাঁদের নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে এবং তাঁদের কর্মজীবনে উন্নতি করতে সাহায্য করেছে।
এই প্রতিবেদনটি ফ্লিপকার্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।