Fan Price Hike

দামের জাঁতাকলে হোটেল রেস্তরাঁও

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ইতিমধ্যেই শহরের অনেক রেস্তরাঁ হয় দাম বাড়িয়েছে, নয়তো একই দামে পরিমাণ কমানোর মতো খরচ বাঁচানোর কিছু বিকল্প পথ নিচ্ছে।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ০৬:২৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

টম্যাটো, কাঁচা লঙ্কা-সহ আনাজের দরের রকেট গতিতে গৃহস্থের হেঁশেলের বাজেট তো বেড়েইছে। সেই সঙ্গে বর্ধিত খরচে কাহিল হোটেল-রেস্তরাঁগুলিও। মাস খানেকের মধ্যে পরিস্থিতি না বদলালে খাবারের দাম বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত তাদের। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ইতিমধ্যেই শহরের অনেক রেস্তরাঁ হয় দাম বাড়িয়েছে, নয়তো একই দামে পরিমাণ কমানোর মতো খরচ বাঁচানোর কিছু বিকল্প পথ নিচ্ছে। তবে খাবারের দাম বৃদ্ধি বা পরিমাণ ছাঁটাইয়ের অভিযোগ মানতে নারাজ হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার (এইচআরএইআই) কর্তারা।

Advertisement

তাঁদের দাবি, ধাক্কা আসছে দু’দিক থেকে। এক দিকে, সংসার খরচ বৃদ্ধির জেরে পকেটে টান পড়েছে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের। ফলে খরচে রাশ টানতে তাঁদের অনেকেই বাইরে খাওয়া কমিয়েছেন। যে কারণে, অনেক রেস্তরাঁয় অতিথির আনাগোনা আগের থেকে কমেছে। অন্য দিকে, হোটেল-রেস্তরাঁর খাবার তৈরির খরচ বেড়েছে। অথচ ব্যবসা হারানোর আশঙ্কায় তার দাম বাড়ানোর পথে হাঁটতে পারছে না। তবে আতিথেয়তা শিল্পের ওই কর্তাদের স্পষ্ট ইঙ্গিত, সংগঠনের সদস্য রেস্তরাঁগুলি মাস খানেক পরিস্থিতি দিকে নজর রাখবে। তার পরেও কাঁচামাল এমনই চড়ে থাকলে খাবারের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বসতে হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট শিল্প সূত্রের খবর, ছোটখাটো হোটেল বা রেস্তরাঁ খরচ কমাতে ইতিমধ্যেই সয়াবিন, বেসনের মতো উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি নিরামিষ খাবারের দিকে ঝুঁকছে। কেউ আবার খাবারের পরিমাণে কিছুটা কাটছাঁট করার কথা ভাবছে। পাতে টম্যাটো দিলেও, তার পরিমাণ হয়তো সামান্য কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে কোথাও কোথাও। ঠিক যেমন চড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে বহু সংস্থা বিস্কুট, শ্যাম্পুর দাম এক রেখে মোড়ক ছোট করেছে।

Advertisement

এইচআরএইআইয়ের সেক্রেটারি প্রণব সিংহ এবং জয়েন্ট সেক্রেটারি সন্দীপ সেহগাল শুক্রবার বলেন, ‘‘আনাজের দাম বাড়ায় মূলত নিরামিষ খাবার তৈরির খরচ বেড়েছ। মাংস বা যে ধরনের মাছ রেস্তরাঁগুলি কেনে, সেগুলির ক্ষেত্রে দর বৃদ্ধির সমস্যা কার্যত নেই। বিভিন্ন সময়ে মাছ-মাংসের দরের যেমন ওঠানামা হয়, সেই ধারাই বহাল।’’ প্রণবের দাবি, খাবার তৈরির ক্ষেত্রে আনাজ-মশলার খরচ সাধারণত গড়ে মোট উৎপাদন খরচের ৩০-৩৫ শতাংশ থাকে। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০-৫৫ শতাংশ।

প্রণব এবং সন্দীপের পাশাপাশি এইচআরএইআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আজহারের দাবি, শহরে তাঁদের মতো সংগঠিত ক্ষেত্রের মাঝারি মাপের রেস্তরাঁগুলি বর্ধিত উৎপাদন খরচ ক্রেতাদের ঘাড়ে চাপায়নি। তাঁদের যুক্তি, সংসার খরচে মূল্যবৃদ্ধির চাপ সামলাতে গিয়ে এমনিতেই সাধারণ রোজগেরে মানুষের হাতে বাড়তি টাকা কমেছে। এর পরেও যাঁরা রেস্তরাঁয় পা রাখছেন, তাঁরা খাবারের দাম বাড়তে দেখলে মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারেন। ফলে কমতে পারে অতিথির ভিড়। তাই মুনাফা কমলেও বাড়তি খরচের বোঝা আপাতত বইছে শিল্পই। সন্দীপের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির জেরে এমনিতেই অতিথির সংখ্যা গড়ে প্রায় ৫% কমেছে। তবে আপাতত কিছুটা সময় দেওয়ার পক্ষপাতী হলেও, আগামী দিনে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তিনিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement