প্রতীকী ছবি।
নভেম্বরের পরে এ মাসেও ১৯ কেজি ওজনের বাণিজ্যিক রান্নার গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডারের দাম বিপুল বেড়েছে। যা হোটেল-রেস্তরাঁ শিল্পের উপরে বড় ধাক্কা। করোনা সঙ্কটে দীর্ঘ দিন ঝাঁপ বন্ধ থাকা, কিংবা সীমিত ক্রেতা নিয়ে ব্যবসা চালাতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়া এই শিল্পমহলের বক্তব্য, বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষের সময়ে কিছুটা বাড়তি লাভের আশা করেছিল তারা। কিন্তু ওই বাড়তি খরচ সেই সম্ভাবনায় কোপ বসাবে। এখনই না হলেও এলপিজি-সহ অন্যান্য কাঁচামালের দামে লাগাম পরানো না গেলে নতুন বছরে হয়তো বাড়াতে হবে খাবারের দাম।
নভেম্বরে কলকাতায় ১৯ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৭০.৫০ টাকা বেড়েছিল। ডিসেম্বরে তা বেড়েছে আরও ১০৩.৫০ টাকা। গত এক বছরের মধ্যে কয়েকবার পণ্যটির দাম সামান্য কমলেও বেড়েছে অনেক বেশি। ওই সময়ের মধ্যে নিট দাম বৃদ্ধির অঙ্ক ৮২৫.৫০ টাকা। হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার (এইচআরএইআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আজ়হার ও সেক্রেটারি প্রণব সিংহ জানান, পুজোর মরসুমে ব্যবসা কিছুটা ফিরেছে। ওমিক্রন নতুন সঙ্কট তৈরি না করলে বছর শেষে বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের সময়ে সেই ধারা বজায় থাকারই আশা। কিন্তু এর পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, এক দিকে পেট্রল-ডিজ়েল ও রান্নার বিভিন্ন কাঁচামালের চড়া দাম এবং অন্য দিকে ফের এলপিজির দাম বৃদ্ধিতে সেই বাড়তি লাভ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আজ়হারের দাবি, লভ্যাংশ ৫%-৬% কমতে পারে।
আজ়হার এবং প্রণব বলছেন, এই পরিস্থিতিতে হোটেল বা রেস্তরাঁ চট করে খাবারের দাম বাড়াতে চায় না। এমনিতেই ক্রেতা কম। তার উপরে দাম বাড়ালে ব্যবসা আরও কমতে পারে। তাই কাঁচামালের দাম ৫%-১০% পর্যন্ত বাড়লেও সাধারণত সেই বাড়তি খরচ নিজেরাই বহন করে তারা। কিন্তু কাঁচামালের দামের দৌড় বজায় থাকলে আগামী দিনে খাবারের দাম না বাড়িয়ে ব্যবসা চালানো কঠিন।
শিল্প সূত্রের খবর, হোটেল-রেস্তরাঁয় খাবার তৈরির মোট খরচের মধ্যে এলপিজি-সহ জ্বালানি খরচ ৪.৫%-৬%। তা ১০% বাড়লে খাবারের খরচ বাড়ে কমপক্ষে ১%-১.৫%। আবার ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারে ৫% জিএসটি চাপলেও ১৯ কেজিতে চাপে ১৮%। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ১৯ কেজির সিলিন্ডারে জিএসটির হার কমিয়ে ৫% করার আর্জি জানায় দ্য ফেডারেশন অব হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পরে ফের সেই আর্জি জানানোর ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।