Electric Car

Electric Car: বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির লক্ষ্যে মউ সই, আবার কী তালা খুলবে হিন্দুস্তান মোটরসের?

গত অর্থবর্ষের আর্থিক ফল ঘোষণা করে সম্প্রতি শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষকে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির পরিকল্পনার কথা জানায় এইচএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৫:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

এশিয়ার দ্বিতীয় আর ভারতের প্রথম গাড়ি নির্মাতা। সেই হিন্দুস্তান মোটরস (এইচএম) কি এ রাজ্যের উত্তরপাড়ায় ফের তাদের কারখানার তালা খুলবে? সি কে বিড়লা গোষ্ঠীর গাড়ি সংস্থাটির বার্তা উস্কে দিয়েছে প্রশ্ন। খবর, ২০১৪ সালে বন্ধ হওয়া ওই কারখানা এবং কিছু জমি নিয়ে ইউরোপের এক সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে সেখানে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির লক্ষ্যে মউ সই করেছে এইচএম। আগামী চার-পাঁচ মাস গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তার মধ্যে পরিকল্পনার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শেষ করার আশা। তা সফল হলে পরের জানুয়ারি-মার্চে সংস্থা দু’টির চূড়ান্ত চুক্তি হতে পারে। তখন সেই বিদেশি সংস্থাও প্রথম বার ভারতে পা রাখবে হিন্দ মোটরসের হাত ধরে।

Advertisement

গত অর্থবর্ষের আর্থিক ফল ঘোষণা করে সম্প্রতি শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষকে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির পরিকল্পনার কথা জানায় এইচএম। যাদের ধারের বোঝা এখন প্রায় উধাও। বুধবার সংস্থার ডিরেক্টর উত্তম বসু বলেন, ‘‘বৈদ্যুতিক গাড়িই ভবিষ্যৎ। ২০১৮ সাল থেকে উত্তরপাড়ার কারখানায় তা তৈরির পরিকল্পনা করছিলাম।’’ তখন একটি চিনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেন তাঁরা। প্রযুক্তিগত মূল্যায়নও হয়। কিন্তু করোনা-সহ নানা কারণে উদ্যোগ এগোয়নি। ইউরোপীয় সংস্থাটির সঙ্গে কথাবার্তা শুরু এই বছর। উত্তমবাবু জানান, তারা দুই এবং চার চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করে। পরিকল্পনাটি সফল হলে উত্তরপাড়ায় প্রথমে দু’চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি হবে। পরে চার চাকা তৈরিও লক্ষ্য।

সংশ্লিষ্ট মহলের আক্ষেপ, হিন্দ মোটরসের উত্তরপাড়া কারখানার ভবিষ্যৎ বরাবরই ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন। গত শতকের ’৫০-এর দশকে ব্রিটিশ মডেল ‘মরিস অক্সফোর্ড’-এর আদলে সেখানে অ্যাম্বাস্যাডর তৈরি শুরু করেছিল এইচএম। দেশবাসীর খুব পছন্দ হয়। বাড়তি সুবিধা ছিল লাইসেন্স-রাজের জমানায় প্রতিযোগিতাহীন বাজার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের অভাব এবং পরে মারুতি-সুজ়ুকি ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি গাড়ি সংস্থার উপস্থিতি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেয় অ্যাম্বি-কে। আশির দশকে বছরে ২৪,০০০ অ্যাম্বাস্যাডর বিক্রি হলেও ২০১৩-’১৪ সালে নামে ২৫০০-তে। মাসে ১৫০০টি গাড়ি তৈরিতে সক্ষম কারখানাটি বন্ধ হওয়ার সময় তৈরি করছিল মাত্র ১৫০টি। বছর পাঁচেক আগে এইচএম জানায়, অ্যাম্বাস্যাডর ব্র্যান্ড ৮০ কোটি টাকায় পিএসএ গোষ্ঠীকে বেচেছে তারা।

Advertisement

উত্তমবাবুর দাবি, তিনটি কারণে বিদেশি সংস্থাটির কাছে এইচএমের প্রস্তাব আকর্ষণীয় হতে পারে। প্রথমত, স্ট্যাম্পিং, ফোর্জিং-এর মতো বিভিন্ন কেন্দ্র সমেত এক ছাদের তলায় সার্বিক গাড়ি কারখানা। দ্বিতীয়ত, সহজে গবেষণা ও ইঞ্জিনিয়ারিং পরিকাঠামো গড়ার সুবিধা। ইউরোপের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম হবে। তৃতীয়ত, সহজে এইচএমের পুরনো ডিলার পরিকাঠামোকে ঘষে-মেজে নেওয়ার সুযোগ। নতুন করে তৈরি করতে সময় লাগে বেশি, বাড়ে খরচও। সব মিলিয়ে দুই সংস্থার পক্ষেই এই পরিকল্পনা লাভজনক হতে পারে।

ফের কারখানা খুললে অতীতের ব্যস্ত ছবিটা ফিরবে উত্তরপাড়ায়। কাজ পাবেন বহু মানুষ। উত্তমবাবুর ইঙ্গিত, কারখানাটির পুরনো যোগ্য কর্মীরা অগ্রাধিকার পেতে পারেন। তেলের ইঞ্জিনের গাড়ি তৈরি করে বহু পথ পার করা হিন্দমোটর যাত্রাপথের নতুন বাঁকে দাঁড়িয়ে প্রাণ ফিরে পাওয়ার আশায়। বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি সেই জিয়নকাঠি হয় কি না, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement