Real Estate

মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাতে পারে আবাসনের দাম-ভাড়া

উপদেষ্টা সংস্থা অ্যানারক বলছে,প্রথম সারির সাতটি শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ির ভাড়া অতিমারি-পূর্ব সময়ের থেকেও গত বছরে গড়ে বেড়েছে ২০%-২৫%।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৫
Share:

ফ্ল্যাটে দাম ও ভাড়া নিয়ে নতুন সমস্যা। — ফাইল চিত্র।

মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা মাথা নামিয়েছে দেশে। কিন্তু বিশ্লেষকদের একাংশের সতর্কবার্তা, এই স্বস্তির মেয়াদ নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই। কারণ বড় শহরগুলিতে আবাসনের দাম এবং ভাড়া যে ভাবে বাড়ছে, তাতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

Advertisement

কাঁচামালের দাম এবং কোভিডের পরে মাথা তোলা চাহিদা টেনে তুলেছে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনার খরচকে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় প্রকাশ, নির্মাতাদের বড় অংশ মনে করছে চলতি বছরে দাম আরও বাড়বে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, একই সঙ্গে বাড়ছে ভাড়া নিয়ে থাকার খরচও। তারা মনে করাচ্ছে, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি হিসাবের ক্ষেত্রে ভাড়া-সহ আনুষঙ্গিক খরচের ভাগ ১০.০৭%। যা এখন তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রসঙ্গত, আবাসনের দাম খুচরো মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না-হলেও তার নির্মাণ সামগ্রীর দাম তাতে যুক্ত হয়। উপদেষ্টারা এখনই সেগুলি সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না।

রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ভাবনা-চিন্তা সম্পর্কে অবগত এক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতি মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাতে পারে বলে আশঙ্কা। আরবিআইয়ের জন্য এটা নতুন উদ্বেগ। তারা গত বছরের বেশিরভাগ সময় চড়া খাদ্যপণ্যের দামে রাশ টানতে লড়েছে। এ বার নজর রাখছে আবাসন ক্ষেত্রে।

Advertisement

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই ৫.৭২ শতাংশে নেমেছে। যা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬% সহনসীমার মধ্যে। আনাজ-সহ কিছু খাদ্যপণ্যও সস্তা হয়েছে। কিন্তু দুশ্চিন্তা কাটেনি। কারণ, খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি বাদে অন্যান্য জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির হার এখনও ৬ শতাংশের কাছে। পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বরে ২০২১ সালের একই মাসের তুলনায় শহরে আবাসন ক্ষেত্রের মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলে হয়েছে ৪.৪৭%। যদিও অক্টোবরের ৪.৫৮ শতাংশের চেয়ে তা কম। ব্যাঙ্ক অব বরোদার অর্থনীতিবিদ অদিতি গুপ্তর বক্তব্য, এই ক্ষেত্রের দাম বৃদ্ধি সার্বিক ভাবে মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

উপদেষ্টা সংস্থা অ্যানারক বলছে,প্রথম সারির সাতটি শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ির ভাড়া অতিমারি-পূর্ব সময়ের থেকেও গত বছরে গড়ে বেড়েছে ২০%-২৫%। কিছু জনপ্রিয় আবাসন প্রকল্পে তা ৩০%। রেটিং সংস্থা কেয়ারএজ গোষ্ঠীর প্রধান অর্থনীতিবিদ রঞ্জনী সিনহার বক্তব্য, কোভিডের সংক্রমণ ফিকে হলেও বাড়িতে বসে কাজের প্রয়োজনীয়তা বাড়ায় বড় ফ্ল্যাটের চাহিদা বহাল থাকবে। তা খাদ্যপণ্য, জ্বালানি বাদে অন্যান্য জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।

গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানেই জানা গিয়েছিল, আবাসনের মূল্যসূচক এক দশকে প্রায় সর্বোচ্চ হয়েছে। অ্যানারকের দাবি, মূলত কাঁচামালের দাম এবং চাহিদা বৃদ্ধির জেরে গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে কলকাতা-সহ সাতটি শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ির গড় দাম বেড়েছে ৪%-৭%। সম্পত্তির বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া রয়টার্সের সমীক্ষা ও অদিতির ইঙ্গিত, আবাসন ক্ষেত্রে দাম আরও বাড়বে।

তবে কলকাতার আবাসনের বাজারে সুদ বৃদ্ধি প্রভাব ফেলার ইঙ্গিত দিলেও অজমেঢ়া রিয়েলটি অ্যান্ড ইনফ্রার ডিরেক্টর ধাবাল অজমেঢ়ার দাবি, তা তেমন প্রভাবে ফেলেনি।ভবিষ্যতেও ফেলবে না। উপদেষ্টা মহল অবশ্য বলছে, আবাসনের দাম বাড়লে সেখানে রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুতের মতো পরিষেবার খরচও বাড়বে। যা মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement