সম্প্রতি হায়দরাবাদে চালু হয়েছে অনলাইন শপিং সংস্থা আমাজনের নতুন অফিস। রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছেই বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে আমাজনের এই অফিস। আমাজনের মূল অফিস রয়েছে আমেরিকায়। আমেরিকার বাইরে এই প্রথম কোনও দেশে এত বড় অফিস খুলল আমাজন।
আমাজনের এই বিশাল অফিস টেক্কা দিতে পারে যে কোনও সেভেন স্টার হোটেলকে। কাজের পাশাপাশি কর্মীদের ছোটবড় সুবিধা অসুবিধা সব কিছুই খেয়াল রেখেছেন কর্তৃপক্ষ।
অফিস ক্যাম্পাস ৯.৫ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে। মোট অফিস স্পেস ১০ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গ ফুট। ১০টা ফুটবল মাঠ একসঙ্গে জুড়লে যতটা বড় এলাকা চোখের সামনে ভেসে উঠবে, প্রায় ততটা এলাকা জুড়ে আমাজনের নতুন অফিস।
আইফেল টাওয়ার বানাতে যে পরিমাণ স্টিল লেগেছিল তার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি স্টিল লেগেছে আমাজনের এই অফিস বানাতে। অফিসের ছাদে হেলিপ্যাড রয়েছে। এক তলা থেকে অন্য তলায় যাতায়াত করার জন্য ৪৯টা এলিভেটর রয়েছে।
আর উচ্চতা? কুতুব মিনারের থেকেও বেশি উঁচু এই অফিস। আমাজনের সামনে দাঁড়িয়ে কেউ যদি তার ছাদ দেখতে চায়, মাথা ঘুরে যেতে বাধ্য। কুতুব মিনারের উচ্চতা যেখানে ২৩৯ ফুট, আমাজনের নয়া অফিসের উচ্চতা ২৮২ ফুট।
ঝাঁ চকচকে এই অফিস মোট ১০ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গ ফুটের। এর বাইরে আমাজন ক্যাম্পাসের ভিতরেই ১০ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে রয়েছে গাড়ি পার্কিং এবং বিনোদনের ব্যবস্থা।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে তৈরি হয়েছে আমাজনের এই অফিস। নাগাড়ে কাজ করেছেন প্রায় ২০০০ শ্রমিক। নিরাপত্তার সমস্ত খুঁটিনাটি মেনে অফিস বানানোর জন্য গত বছর ন্যাশনাল সেফটি কাউন্সিলের থেকে গোল্ডেন ট্রফি এবং সার্টিফিকেট পেয়েছে এই অফিস। অগ্নিসুরক্ষার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।
বিভিন্ন ধর্মের প্রার্থনার জন্য ঘর, সদ্য মায়েদের জন্য আলাদা ঘর, বিশ্রামাগার, স্নানের জায়গা, হেলিপ্যাড এবং ২৪ ঘণ্টা খোলা ক্যাফেটেরিয়া, এই সুবিধাগুলোও মিলবে আমাজনের হায়দরাবাদ অফিসের কর্মীদের।
এমনকি কাজের প্রতি একঘেয়েমি কাটাতে অফিসের ভিতরে ব্যক্তিগত সময় কাটানোর ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আমাজনের এই ক্যাম্পাসের চারপাশে সব মিলিয়ে ৩০০টা গাছ রয়েছে। যার মধ্যে তিনটে আবার ২০০ বছরের পুরনো। জলের অপচয় রোধ করার জন্য ৮ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার জল পুনর্ব্যবহারের প্ল্যান্ট রয়েছে।
একসঙ্গে ১৫ হাজার কর্মী বসে কাজ করতে পারেন এই অফিসে। ২৯০টা কনফারেন্স রুম রয়েছে। বিশালাকার এই ক্যাম্পাস বানাতে কত খরচ হয়েছে তা অবশ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে জানা গিয়েছে, এটা বানাতে কয়েকশো মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।