প্রতীকী ছবি।
ঋণের আবেদন মঞ্জুরের পরে তা অনুৎপাদক সম্পদে (এনপিএ) পরিণত হলে অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট অফিসারকে হেনস্থা হতে হয় বলে অভিযোগ। এই ধরনের ঘটনায় তাঁর ভূমিকা কী, তা নির্ধারণ করতে নতুন পদ্ধতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করল অর্থ মন্ত্রক। পরের অর্থবর্ষ (২০২২-২৩) থেকে সমস্ত ব্যাঙ্ককেই তা মানতে হবে। সোমবারই প্রথমে ঋণ মঞ্জুর এবং সেটি এনপিএ হওয়ার পরে কম দামে সেই সম্পত্তি বিক্রি সংক্রান্ত মামলায় স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রতীপ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে মন্ত্রকের এই নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
অর্থ মন্ত্রক বলেছে, ঋণ অনুৎপাদক সম্পদ ঘোষিত হওয়ার ছ’মাসের মধ্যে যে অফিসার তা মঞ্জুর করেছেন, তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে। কী ভাবে তা করা হবে, সেটাও বলা হয়েছে। দেখা হবে, নিয়ম না-মেনে ইচ্ছাকৃত ভাবে অযোগ্য আবেদনকারীকে ঋণ দেওয়া হয়েছে কি না। যাচাই করা হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীর চাকরি জীবনের রেকর্ডও। এ জন্য প্রতারণা ছাড়া ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত সাধারণ ঋণকে এনপিএ-র অঙ্কের ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাঙা হয়েছে। তার বেশি বকেয়া ঋণের ক্ষেত্রে বর্তমান নিয়মই কার্যকর হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বহু ক্ষেত্রে অসৎ কর্মীর কারণে সৎ অফিসারদের ভুগতে হয়। এখন ব্যাঙ্কগুলি নিজেদের মতো করে ভূমিকা খতিয়ে দেখে। অনেক সময়েই অফিসারের তা নিয়ে ধারণা থাকে না। ফলে ঋণ এনপিএ-তে পরিণত হলে হেনস্থা হতে হবে, এই আশঙ্কা থেকে তা মঞ্জুরের সময়ে একটু বেশিই কড়াকড়ি করেন। এতে ঋণগ্রহীতার টাকা পেতে দেরি হয়। যা শিল্পের দ্রুত মূলধন জোগাড়ের পথে বাধা। নির্দেশিকা কার্যকর হলে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটবে।
দু’টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশে যাওয়া ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, ‘‘সততার সঙ্গে ঋণ মঞ্জুরের পরে তা এনপিএ হলে বহু ব্যাঙ্ক অফিসারকে অবসরের পরেও হেনস্থা হতে হয়। পেনশন আটকানোর নজিরও রয়েছে। আশা, নতুন ব্যবস্থায় সমস্যার সমাধান হবে।’’ বিশেষজ্ঞদের আশা, এতে কর্মীদের আস্থা বাড়বে। ঋণ মঞ্জুরে গতি আসবে। দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই পাবেন সৎ অফিসারেরা। আর অসৎ কর্মীরা দ্রুত শাস্তি পাবেন।