লক্ষ্যমুখী। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনের পথে জেটলি। শুক্রবার। শ্রীনগরে। ছবি:পিটিআই
পণ্যে করের হার ঠিক হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। শুক্রবার পরিষেবাতেও সেই হার ঠিক করে ফেলল জিএসটি পরিষদ।
পণ্যের মতো এ ক্ষেত্রেও করের হার ৪টি (৫, ১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশ)। তা ছাড়া, জিএসটি বসানোই হচ্ছে না শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবায়। করের হার শূন্য শতাংশ লোকাল ট্রেন ও রেলের সাধারণ কামরার টিকিটেও।
পরিষেবায় কর বসাতে গিয়ে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই মাথায় রাখা হয়েছে দামের বিষয়টি। দামি-এসি রোস্তোরাঁর ক্ষেত্রে করের হার এক রকম। আবার তা আলাদা কম দামি রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে। দৈনিক ভাড়া অনুযায়ী কর ঠিক হয়েছে হোটেল এবং লজের জন্য। একই উড়ানে দু’রকম কর গুনতে হবে ইকনমি ও বিজনেস ক্লাসের টিকিট কাটলে।
কেন্দ্রের দাবি, এ ভাবে কর বসানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে। যুক্তি, সাধারণ হোটেল আর পাঁচ তারায় করের হার এক হবেই বা কী করে? বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, এ বিষয়ে সরকারের এই যুক্তি উড়িয়ে দেওয়া যায় না ঠিকই। কিন্তু জিএসটি চালুর অন্যতম যে উদ্দেশ্য, সেই কর ব্যবস্থা সরল করার লক্ষ্য এতে ধাক্কা খায়।
টেলিকম, ব্যাঙ্কিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবায় ১৮ শতাংশ হারে কর বসানোর কথা এ দিন ঘোষণা করেছে পরিষদ। অনেকের প্রশ্ন, মোদী সরকার যে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা প্রচার করে, তার অনেকটাই তো দাঁড়িয়ে এই ক্ষেত্রগুলির বাড়বাড়ন্তের উপর। তাহলে তাদের উপরে করের বোঝা আগের ১৪-১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮ শতাংশে নীচে যাওয়ার যুক্তি কী? এ প্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটের (আগের স্তর পর্যন্ত মেটানো কর ফেরত) হিসেব যখন কষা হবে, তখন বোঝা যাবে আদতে তাদের উপর বাড়তি কর চাপেনি।
ওই একই সাক্ষাৎকারে তাঁর ইঙ্গিত, ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করতে সমস্ত রাজ্যই আগ্রহী। ফলে তার মধ্যে নতুন কর-ব্যবস্থার জন্য তৈরি হওয়া ছাড়া শিল্পের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। রাজস্ব সচিব হাসমুখ আঢিয়ার আশ্বাস, কম হারের সুবিধা ক্রেতা ও গ্রাহকের ঘরে পৌঁছচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখবে কেন্দ্র। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে।
জিএসটি-কথা
কর নেই
• শিক্ষা • স্বাস্থ্য পরিষেবা
• রেলে সাধারণ কামরার টিকিট
• মেট্রো, লোকাল ট্রেনের টিকিট
• ধর্মীয় যাত্রার টিকিট
• দিনে হাজার টাকার কম ভাড়ারহোটেল ও লজ
৫%
• পরিবহণ
• টিকা
• ব্র্যান্ডেড জামাকাপড়
• অ্যাপ-ট্যাক্সি
• রেলে এসি কামরার টিকিট
•বিমানের ইকনমি টিকিট
১২%
• বার ও এসি ছাড়া রেস্তোরাঁ
• বিমানের বিজনেস ক্লাসের টিকিট
• ১,০০০-২,০০০ টাকা ভাড়ার হোটেল
১৮%
• টেলিকম পরিষেবা
• তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা
• ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক পরিষেবা
• বিমা
•বার ও এসি-সহ রেস্তোরাঁ
• ২,৫০০-৫,০০০ টাকা ভাড়ার হোটেল
২৮%
• দিনে ৫,০০০ টাকার বেশি ভাড়ার হোটেল
• পাঁচ তারা হোটেল ও রেস্তোরাঁ
• সিনেমা হল
• রেসকোর্সের মতো জায়গায় বাজি ধরা
এর পরে
সোনার গয়না-সহ কয়েকটি ক্ষেত্রে করের হার ঠিক হওয়া এখনও বাকি। তা নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক হবে আগামী ৩ জুন।