BSE

আমেরিকা থেকে বিহার, বাজারের চোখ বহু দিকে

বিশ্ব বাজার তাকিয়ে রয়েছে আমেরিকার ভোটের দিকে। বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের দিকেও তাকিয়ে ভারতের বাজার। 

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার 

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৯
Share:

ফাইল চিত্র।

অতিমারি জন্ম দিয়েছে নতুন এক বিশ্বের। যেখানে বাঁচতে গেলে বদলাতে হবে জীবনযাপনের ধরন। সম্ভবত স্থায়ী ভাবেই। কারণ, করোনা বারবার নতুন করে আঘাত হানছে নানান দেশে। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও। উঠতে উঠতেও ধাক্কা খাচ্ছে শেয়ার বাজারগুলি। ঠিক যেমন হয়েছে গত সপ্তাহে।

Advertisement

অর্থনীতির কয়েকটি ক্ষেত্র থেকে একটু ভাল হাওয়া বইতে শুরু করায় ২৩ অক্টোবর এক সময়ে সেনসেক্স ৪০,৮১১ পয়েন্টে পৌঁছেছিল। এর পরেই করোনাজনিত আঘাত লাগে বাজারে। ফলে গত সপ্তাহের পাঁচটি লেনদেনের দিনের মধ্যে চারদিনই সূচক পড়েছে। শুক্রবার সেনসেক্স বন্ধ হয় ৩৯,৬১৪ পয়েন্টে।

অদূর ভবিষ্যতে বাজারে কিছুটা স্থিরতা আসবে কি? তা নির্ভর করছে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর। এর মধ্যে করোনা হানা, সংস্থার আর্থিক ফল তো রয়েছেই। বিশ্ব বাজার তাকিয়ে রয়েছে আমেরিকার ভোটের দিকে। বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের দিকেও তাকিয়ে ভারতের বাজার।

Advertisement

• জিএসটি সংগ্রহ (অক্টোবর) ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা

• পরিকাঠামোয় উৎপাদন কমেছে (সেপ্টেম্বর) ০.৮%

• ব্যাঙ্ক ঋণ বৃদ্ধি (সেপ্টেম্বর) ৫.৮%

• শিল্প ঋণ বৃদ্ধি (সেপ্টেম্বর) ০%

• রাজকোষ ঘাটতি (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) লক্ষ্যমাত্রার ১১৪.৮%

সম্প্রতি ইউরোপে আছড়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। যা সামলাতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো বড় মাপের অর্থনীতি ফের লকডাউনের পথে হেঁটেছে। এ দিকে আমেরিকায় দিনে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। নতুন করে এর প্রতিকূল প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ব্যবসা ও বাজারে। এই অবস্থায় সূচককে অস্থির রেখেছে সেখানে প্রেসিডেন্ট ভোট নিয়ে জল্পনাও। করোনার জেরে যার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির লাগাম কার হাতে আসে সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব বাজার।

দেশে অবশ্য সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। উৎসবের কেনাকাটার উপরে ভর করে অক্টোবরে জিএসটি ১ লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি পার করেছে বেশ কয়েক মাস পরে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে অর্থনীতি সাড়া দিতে শুরু করেনি এখনও। সেপ্টেম্বরে মোট ব্যাঙ্ক ঋণ আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৫.৮% বাড়লেও, শিল্প ঋণ বৃদ্ধির হার কিন্তু শূন্যই থেকে গিয়েছে। এর থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট— ঋণের ব্যাপারে সরকার নানা সুবিধা দিলেও লগ্নিকারীরা এখন নতুন করে টাকা ঢালতে চাইছেন না। এরই মধ্যে পরিষেবা এবং ব্যক্তিগত ঋণ অবশ্য যথাক্রমে ৯.১% ও ৯.২% বেড়েছে।

সেপ্টেম্বরে দেশের প্রধান আটটি পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উৎপাদন ০.৮% সঙ্কুচিত হয়েছে। এই নিয়ে পরপর সাত মাস। অন্য দিকে, অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসেই (এপ্রিল-ডিসেম্বর) রাজকোষ ঘাটতি পৌঁছে গিয়েছে গোটা বছরের বাজেট প্রস্তাবিত ঘাটতির ১১৪.৮ শতাংশে। ফলে অস্বস্তি সর্বত্র।

এরই মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বরের ফল প্রকাশ করেছে বেশ কিছু সংস্থা। এয়ারটেলের লোকসান ২৩,০৪৫ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭৬৩ কোটি। এলঅ্যান্ডটি-র মুনাফা ২৫১২ কোটি থেকে কমে ১৪১০ কোটি। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক ১৮ কোটি টাকা ক্ষতির জায়গায় মুনাফা করেছে ১৮৪৯ কোটি। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নিট লাভ ছ’গুণের বেশি বেড়ে পৌঁছেছে ৪২৫১ কোটিতে। ইন্ডিয়ান অয়েলের তা ১১ গুণ বেড়ে ৬২২৭ কোটি। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের লাভ ১১,২৬২ কোটি থেকে নেমেছে ৯৫৬৭ কোটিতে।

এই সমস্ত ফলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে বাজারে। আজ, সোমবার বোঝা যাবে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ় ও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ফলাফলের কী প্রতিক্রিয়া হয়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement