—প্রতীকী ছবি।
১৫ বছর ধরে চলা আইনি ল়ড়াইয়ে হেরে গেল গুগ্ল। ব্রিটিশ দম্পতিকে জরিমানা হিসাবে ২৪০ কোটি পাউন্ড (২৬,১৭২ কোটি টাকা) দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। ব্রিটিশ ওই দম্পতির অভিযোগ ছিল, নিজেদের আধিপত্যের অপব্যবহার করেছে গুগল। বাজারকে প্রভাবিত করে নির্দিষ্ট পণ্য কিনতে ক্রেতাকে বাধ্য করেছে ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। ১৫ বছর আগে দম্পতি মামলাটি করেন। ২০১৭ সালে ইউরোপীয় কমিশন গুগ্লকে জরিমানাস্বরূপ ওই টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ খারিজের আর্জি জানিয়ে ‘ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস’-এর দ্বারস্থ হয়েছিল গুগ্ল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ওই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে ইউরোপের শীর্ষ আদালত। জানিয়ে দিয়েছে, ইউরোপীয় কমিশনের নির্দেশ মতো জরিমানার টাকা দম্পতির হাতে তুলে দিতেই হবে গুগ্লকে। গুগ্লের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ওই রায়ে হতাশ।
গুগ্লের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধে জয়ী দম্পতি হলেন শিভাউন র্যাফ এবং তাঁর স্বামী অ্যাডাম। ২০০৬ সালে চাকরি ছেড়ে নিজেদের স্টার্টআপ ব্যবসা শুরু করেন দম্পতি। ‘ফাউন্ডেম’ নামে ওই ওয়েবসাইটের কাজ ছিল, গ্রাহকদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন সংস্থার একই পণ্যের দামের তুলনা করা। যাতে গ্রাহকেরা ওই পণ্য কোন সংস্থা থেকে কিনবেন, তা ঠিক করতে পারেন।
কিন্তু দম্পতির অভিযোগ, গুগ্ল আচমকাই সার্চ রেজাল্টের দিক থেকে নীচে নামাতে শুরু করে তাঁদের ওয়েবসাইটকে। কোনও গ্রাহক গুগ্লে সার্চ করলেও সহজে তাঁদের সংস্থার নাম দেখাচ্ছিল না। পুরো বিষয়টিকে ‘স্প্যাম’ ভেবে এই নিয়ে উদ্বিগ্ন দম্পতি চিঠি পাঠায় গুগ্লকে। তাঁদের সংস্থার উপর আরোপিত বিধিনিষেধও তুলে নেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু তার কোনও সদুত্তর দেয়নি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। এ দিকে গুগ্লে ওই ওয়েবসাইটির ‘র্যাঙ্ক’ ক্রমেই নীচে নামছিল। ২০০৮ সালে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে দম্পতি বুঝতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন ব্রিটিশ দম্পতি। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বাজারকে প্রভাবিত করে নির্দিষ্ট পণ্য কিনতে ক্রেতাকে বাধ্য করছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। আর সেই কারণেই পণ্যের দামের তুলনা করতে সক্ষম ওয়েবসাইটটিকে সার্চের উপরের দিকে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর পর ২০১৭ সালে গুগ্লকে জরিমানার নির্দেশ দেয় ইউরোপীয় কমিশন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে গুগ্ল ইউরোপের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার সেই আর্জি খারিজ হয়ে গেল।