প্রতীকী ছবি।
সোনার গয়নার বাজার শুনশান। দেশ জুড়ে আছড়ে পড়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাড়তে থাকা সংক্রমণ আর মৃত্যুর ভয়াল আবহে ক্রেতা উধাও। এই অবস্থায় কলকাতায় ফের সোনা ছাড়াল ৫০,০০০ টাকা। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে, এক সপ্তাহ বন্ধের পরে সোমবার বাজার খুলতেই সোনাপট্টিতে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট পাকা সোনার দাম জিএসটি-সহ দাঁড়ায় ৫০,০৫৮ টাকা। যদিও বৌবাজারে গয়না ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদা কম থাকায় দাম ঘোরাফেরা করেছে ৪৯,৩০০ টাকার আশেপাশে।
গত বছর দেশে করোনার প্রথম ঝাপটার সময়ও সোনার এমনই দৌড় দেখেছিল দেশবাসী। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অর্থনীতি অনিশ্চয়তায় ডুবলে বাড়ে হলুদ ধাতুর দাম। কারণ, সুরক্ষিত বলে তার চাহিদা বাড়ে। সংক্রমণের দ্বিতীয় কামড়েও সেটাই হচ্ছে। পাকা সোনার কারবারি এবং জেজে গোল্ডের কর্তা হর্ষদ আজমেরা জানান, ‘‘১০ দিনে পাকা সোনা প্রায় ১১০০ টাকা বেড়েছে। গত বছর মে মাসের থেকে এখন হাজার সাতেক টাকা চড়া দর।’’
বুলিয়ান মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি দীনেশ খাবরা বলছেন, ‘‘গত বছর সোনার দাম রেকর্ড গড়ার পরে প্রায় ২০% পড়েছিল। করোনার প্রকোপ কমার পাশাপাশি আয় বৃদ্ধি পেয়ে বন্ডের বাজারের জৌলুস বাড়াই যার প্রধান কারণ। কিন্তু বাড়তে থাকা সংক্রমণে ফের অনিশ্চিত অর্থনীতি। ফলে আবার সোনাকে লগ্নির নিরাপদ জায়গা হিসেবে আঁকড়ে ধরছেন লগ্নিকারীরা।’’ তাঁর দাবি, গত বছর চড়া দামের বাজারে হাতের সোনা বেচে যাঁরা মুনাফা তুলেছেন, তাঁরা এখন ফের সেই টাকা সোনায় লগ্নি করছেন। ফলে লগ্নির বাজারে সোনার চাহিদা বাড়ায় দাম চড়ছে। নেটে ব্যবহৃত মুদ্রা (ক্রিপ্টোকারেন্সি) থেকে লগ্নি তুলেও অনেকে সোনা কিনছেন, বলছেন অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আশিস পেথে। পণ্য বাজার বিশেষজ্ঞ, ভিস্তা ইনটেলিজেন্সের এমডি অরিন্দম সাহার মতে, ‘‘সংক্রমণের জেরে ভারতে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা চাড়া দিতে পারে। এই আশঙ্কা সোনায় লগ্নির ঝোঁক বাড়িয়েছে। আমেরিকায় বেকারত্ব বাড়ায় সেখানকার অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা। যার ধাক্কা ভারতের আর্থিক বাজারকে আরও অনিশ্চিত করতে পারে। এত অনিশ্চয়তার মধ্যে সোনায় লগ্নি বেড়ে তার দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক।’’ আগামী দিনে সোনার দাম আরও বেড়ে গয়নার বাজারকে প্রভাবিত করবে, হুঁশিয়ারি স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে-র।