দাম বেড়েছে গয়নাগাঁটিরও। প্রতীকী ছবি।
লাফিয়ে বাড়ছে সোনার দাম। কমছে গয়নার চাহিদা। শনিবার কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) পৌঁছেছে ৫৫,৭৫০ টাকায়। জিএসটি নিয়ে ৫৭,৫০০ টাকার কাছে। ফলে দাম বেড়েছে গয়নাগাঁটিরও।
স্বর্ণশিল্প মহল বলছে, বড় এবং মাঝারি দোকানে কিছু কেনাকাটা চললেও মাথায় হাত বহু ছোট গয়না ব্যবসায়ীর। বিপাকে ক্রেতারাও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের ছুটিতে অনেকেই বিয়ের কেনাকাটা সারেন। ফলে অনেক ক্রেতা আসছেন। তবে সকলে কিনছেন না। বেশিরভাগ দাম দেখে হাত ছোঁয়াতেই পারছেন না। কেউ বাজেট কমাচ্ছেন।
তিন মাসে পাকা সোনা বেড়েছে প্রায় ৫০০০ টাকা। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ১ অক্টোবর তা ছিল কর ছাড়া ৫০,৮৫০ টাকা। শনিবার হয় ৫৫,৭৫০। তবে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রুপো। এই সময়ে প্রতি কিলোগ্রাম রুপোর বাটের দাম বেড়েছে ১২,০০০ টাকা।
জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ জানান, গত দু’মাসে বিশ্ব বাজারে আউন্সে সোনার দর বেড়েছে ১২%। শনিবার ছিল ১৮২৪.১০ ডলার। স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে-র মতে, রাশিয়া-ইউইক্রেনের যুদ্ধ এর অন্যতম কারণ। তবে এখন বাড়ছে ফের কোভিডের আশঙ্কায়। পঙ্কজবাবুর দাবি, আর্থিক ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে সোনা বিক্রি বাড়ায়। ফলে চড়ে দামও। কোভিড নিয়ে চিন্তা বাড়লেই তাই সোনা চড়ছে। কারণ, লকডাউন, কড়াকড়ির আশঙ্কায় লগ্নির অন্যান্য ক্ষেত্র দুর্বল হওয়ার চিন্তা থাকে। তার উপরে ডলারও চড়া। ব্যবসায়ীদের সোনা কিনতে ডলার জোগাড়ের খরচ বেড়েছে।
পিসি চন্দ্র গোষ্ঠীর এমডি উদয় চন্দ্র বলছেন, গয়নার চাহিদায় এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। দাম কমার অপেক্ষায় বসে বহু ক্রেতা। ১৭ জানুয়ারি বিয়ের মরসুম শুরু। আশা, তখন চাহিদা বাড়বে। সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভঙ্কর সেনের মতে, দাম নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। অনেকে আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন। শ্যাম সুন্দর জুয়েলার্সের কর্ণধার রূপক সাহাও সে কথা জানান। তাঁর দাবি, দাম বাড়লে একাংশ হালকা গয়না খোঁজেন। এটা মাথায় রাখা হচ্ছে।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পি সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার বলেন, সব থেকে কাহিল অবস্থা ছোট দোকানগুলির। তিনি বলেন, “বাজার খুব খারাপ।’’ মধ্য কলকাতার গয়নার পাইকারি ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন পাঞ্জার দাবি, বিক্রি প্রায় ৮০% কমেছে।