—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ধনতেরসে মঙ্গলবার ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় স্বস্তি জুগিয়েছিল গয়না ব্যবসায়ীদের। বুধবার তার বাদবাকি কেনাকাটা শেষ হওয়ার আগেই সেই স্বস্তি উধাও। উল্টে আশঙ্কা বাড়াল এই প্রথম ৮০ হাজারের গণ্ডি ছাড়ানো নজিরবিহীন সোনার দাম। বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, ধনতেরসে সোনা বা গয়না কেনার কারণ মূলত সংস্কার বা আচার। ফলে যে সাধারণ মানুষের কেনাকাটা এ বছর সেই বাজারকে চাঙ্গা করেছে, তা আগামী দিনে বহাল থাকা নিয়ে সন্দেহ আছে। বহু ক্রেতাই হাত ছোঁয়াতে পারবেন না। মার খেতে পারে মূলত ছোট দোকান। তবে অন্য অংশের মতে, সাধারণ আয়ের অনেকেও লগ্নি হিসেবে সোনার গয়না কিনছেন। শুধু ব্যবহারের সামগ্রী হয়ে থাকছে না সেগুলি। তাই কষ্ট করেও তাঁরা গয়না কিনছেন ভাল রিটার্ন পাওয়ার জন্য।
এ দিন কলকাতায় জিএসটি ছাড়াই খুচরো সোনার (১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট) দাম ছুঁয়েছে ৮০,২০০ টাকা। জিএসটি নিয়ে ৮২,৬০৬। গয়নার সোনাও নজির গড়ে ৭৬,২৫০ টাকা হয়েছে, কর ধরে ৭৮,৫৩৭.৫০ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি, তবু মঙ্গলবারের পরে ধনতেরসের কেনাকাটা পুরোদমে চলেছে বুধবার সকালেও। তবে ছোট-বড় দোকান মিলিয়ে সামনে আসা পরিসংখ্যানে চড়া দামের ছাপ স্পষ্ট। দেখা গিয়েছে, ব্যবসা টাকার অঙ্কে গত বছরের চেয়ে বেড়েছে ১২%-২০%। কিন্তু সোনার ওজনের নিরিখে কমেছে ১৫%-২০%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর কারণ খরচ সামলাতে বেশির ভাগই কম ওজনের গয়নায় ঝুঁকেছেন। বেশি বিক্রি হয়েছে হালকা কানের দুল, আংটি, ব্রেসলেট, গলার চেন ইত্যাদি। বহু ক্রেতা পুরনো সোনা দিয়েও নতুন কিনেছেন। ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ জানান, তাঁদের দোকানে ১০ জন ক্রেতার পাঁচ জনই পুরনোর পরিবর্তে বা তাতে নতুন সোনা যোগ করে গয়না কিনছেন। তিনি বলেন, ‘‘২০১৯-এ খুচরো সোনা ছিল ৩৮,৯২৫ টাকা। গত বছরেও ৬০,৮৫০-এ বিক্রি হয়েছে। ফলে লাভ করেছেন প্রায় সকলেই।’’
বড়বাজার জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি রবি কেরেল-এর মতে, ‘‘কেনাকাটার আগ্রহ দেখে উৎসাহিত আমরা। তবে ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা না কমলে সোনার দামে লাগাম পরানো মুশকিল। আমেরিকায় সুদ কমলে দাম আরও বাড়তে পারে।’’ অঙ্কুরহাটি জেম অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের সভাপতি অশোক বেঙ্গানি বলেন, আমেরিকায় পরের সপ্তাহে ভোট। তার ফলের প্রভাবও পড়বে দামে। তবে সোনা ব্যবসায়ী বাছরাজ বামালুয়ার ধারণা, পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ থামলে এবং আমেরিকায় ভোট মিটলে সোনার দাম কমার সম্ভাবনা আছে।
বাজার সূত্রের দাবি, বহু ক্রেতা এ বার রুপো কিনেছেন বেশি। যদিও তার দামও হালে বেড়েছে। পিসি চন্দ্র গোষ্ঠীর এমডি উদয় চন্দ্রও জানান, সোনার গয়নার পাশাপাশি ধনতেরসে রুপোর গয়না ও বাসনের বিক্রি ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক দোকানে প্রচুর রুপোর কয়েন বিকিয়েছে।