ধনতেরসে গয়না কিনতে লাইন। বৌবাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
দু’বছর আগে ছিল অর্থনীতির ঝিমুনি। আর গতবার করোনা। দুটো কঠিন মরসুম পার করে মঙ্গলবার ধনতেরসের দিনে ফের গয়নার দোকানে ভিড় জমালেন ক্রেতারা। মুখে হাসি ফুটল ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের। এমনকি, এ দিন গয়নার বাজারে উৎসাহ দেখে অন্যান্য পণ্যের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আশা তৈরি হয়েছে, এ বার বুঝি হাওয়া লাগবে তাদের ব্যবসার পালেও। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স মনে করছে, দীপাবলি থেকেই দেশে ঘুরে দাঁড়াবে ব্যবসা।
এ দিন লেনদেনের শেষে বড়-মাঝারি গয়নার ব্যবসায়ীদের একাংশ জানিয়েছেন, কোভিডের আগের মতো না হলেও ধনতেরসে তার প্রায় ৮০% ব্যবসা ফিরে পেয়েছেন তাঁরা। কারও কারও ব্যবসা আবার প্রাক্-কোভিডের অঙ্ককেও ছাপিয়েছে। ছোট ব্যবসায়ীরা জানান, ৬০% ব্যবসা ফিরেছে।
ধনতেরসে গয়নার ব্যবসা মাথা তোলার কারণ কী? ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের ভারতের সিইও সোমসুন্দরম পি আর বলেন, ‘‘জমে থাকা চাহিদার বিক্রিতে পরিণত হওয়া তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে সোনার দাম কমা, কোভিড বিধি শিথিল হওয়া। বর্ষা ভাল হওয়ায় গ্রামের মানুষের হাতে টাকা এসেছে। গয়না কিনেছেন তাঁরাও।’’ উল্লেখ্য, গত বছর ধনতেরসে কলকাতায় ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট সোনা ছিল ৫১,৪৪০ টাকা (জিএসটি ছাড়া)। এ দিন ৪৮,৫৫০ টাকা। স্বর্ণ শিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় মফস্সলের ক্রেতারা কলকাতায় আসতে পেরেছেন।’’ এইচ কে জুয়েলসের ডিরেক্টর পরাগ সাহার মতে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাবও গয়নার বাজারে পড়েছে।
সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন এবং অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরী বলেন, ‘‘ক্রেতাদের ঢল দেখে মনে হচ্ছে প্রাক্-কোভিডের ব্যবসাকেও ছাড়িয়ে যাবে।’’ বনগাঁর গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহের বক্তব্য, ‘‘ধনতেরাসে ব্যবসার অঙ্ক প্রাক্-করোনার ৮০% ছুঁয়ে ফেলেছে।’’ বেলঘরিয়ার এক ছোট দোকানের মালিক কৌশিক পোদ্দার বলছেন, ‘‘প্রাক্-কোভিডের ব্যবসার ৬০ শতাংশে পৌঁছেছি এ দিন।’’