প্রতীকী ছবি।
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে তাঁরা। পেশাদারি জগতে সাফল্যের মাইলফলক ছুঁয়েছেন নানা ক্ষেত্রে। কিন্তু ঘরের টান ফের তাঁদের এক সুতোয় বেঁধেছে। আইআইটি-খড়্গপুরের এক দল প্রাক্তনী জোট বেঁধে শুধু রাজ্যের জন্যই গড়েছেন অলাভজনক সংগঠন, অ্যাস্পিরেশন বেঙ্গল ফাউন্ডেশন (এবিএফ)। লক্ষ্য, আর্থিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরামর্শ জুগিয়ে রাজ্যকে লগ্নির গন্তব্য হিসেবে দেশ-বিদেশের মানচিত্রে আরও বেশি করে জায়গা করে দেওয়া। রাজ্যও তাঁদের মেধা ও যোগাযোগকে কাজে লাগাতে কোমর বাঁধছে। সরকারের প্রস্তাবিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ নীতি রূপায়নে এবিএফ-এরই সহায়তা নেবে সংশ্লিষ্ট দফতর।
এবিএফ-এর অন্যতম ট্রাস্টি পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় জানান, বছর দেড়েক আগে তাঁরা সংগঠনটি গড়েন। লক্ষ্য, দেশে-বিদেশে সতীর্থদের বিপুল যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে চলা। পরিকল্পনা মাফিক ২০২২-এর গোড়ায় প্রায় চার মাস ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তামিলনাড়ু-মহারাষ্ট্রের মতো শিল্পে অগ্রণী রাজ্যগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনামূলক সমীক্ষা চালান তাঁরা। গত ১০ বছরের তথ্যের ভিত্তিতে তার রিপোর্ট তৈরির পরে স্পষ্ট হয়, খাবার ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি এ রাজ্যে। কম-বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্লাস্টিক, বস্ত্র, হালকা যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক পণ্যের মতো ক্ষেত্রগুলিও। সেই সূত্রেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে লগ্নি টানার রসদ-পরিকাঠামো চিহ্নিত ও পদক্ষেপ করার রূপরেখা তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরকে সহায়তা দেবেন তাঁরা।
কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের সম্ভারে রাজ্য পিছিয়ে না-থাকলেও শিল্পের প্রয়োজনে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের হার নামমাত্র। তা বাড়ানোয় জোর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সচিব সুব্রত গুপ্ত। সেই লক্ষ্যেই নীতি তৈরির জন্য এবিএফ-এর সহায়তা নেওয়ার কথা বলেছেন। যিনি নিজেও আইআইটি-খড়গপুরের প্রাক্তনী।
তবে নিছক প্রথাগত নীতি চায় না খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর। সুব্রতবাবু জানান, নীতির মাধ্যমে কোথায় কতটা সম্ভাবনা সেই তথ্য লগ্নিকারীদের কাছে পৌছনোর চেষ্টা করা হবে। নতুনের সঙ্গে অব্যবহৃত বা কম ব্যবহৃত পরিকাঠামোকে কাজ লাগানোয় জোর দেওয়া হবে। স্বনির্ভর ও কৃষক গোষ্ঠীর মতো সব পক্ষকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, কৃষিতে এক ক্ষেত্রের বর্জ্য অন্য ক্ষেত্রে (যেমন, মাছ বা প্রাণী সম্পদের খাদ্য হিসেবে) কাজে লাগানো যায়, এ সবেও জোর দেওয়া হবে।
লগ্নির সহায়ক পরিবেশ তৈরি, শিল্প ও শিক্ষার মধ্যে মেলবন্ধনের কাজও করবে এবিএফ। রয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রের গবেষণাকে শিল্পের সহায়ক করে তোলায় ঝাঁপানোর পরিকল্পনাও।