আরও বাড়তে পারে খাদ্যপণ্যের দাম। — ফাইল চিত্র
আয় কমার পাশাপাশি যখন দৈনন্দিন বাজারের খরচও লাগামছাড়া তখন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ)-এর একটি সমীক্ষা আরও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। ২৪ জুন প্রকাশিত এই সমীক্ষায় আইএমএফ বলছে, আগামী এক বছরে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি গোটা বিশ্বের, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে।
এই সমীক্ষা বলছে, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে ইতিমধ্যেই দাম লাগামছাড়া। ভারতে খাদ্যপণ্যের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ইতিমধ্যেই ৫.১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর মূলত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়াক কারণেই এখনই দেশে সামগ্রিক খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৩ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলায় তা নীতি নির্ধারকদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কে সুব্রহ্মণ্যম অবশ্য বাজারে খাদ্যপণ্যের দামের এই লাগামছাড়া লাফের কারণ হিসাবে বিভিন্ন রাজ্যের লকডাউনকেই দায়ী করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা থেকে দেশের একটা বড় সংখ্যার নাগরিককে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি কারণে ভোগান্তি হয়নি বলেই তাঁর দাবি।
টাকা দুর্বল হওয়ায় কেনার খরচও বাড়ছে অনেক বেশি ফাইল চিত্র।
আইএমএফ-ও লকডাউনকে একটি কারণ হিসাবে মনে করলেও, অন্যতম কারণ হিসাবে মানছে না। তবে তাদের আশঙ্কা লাগামছাড়া খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ব জুড়ে দারিদ্র বাড়বে। ক্রিশ্চিয়ান বগম্যানসের নেতৃত্বে আইএমএফ-এর গবেষণা বিভাগের এই সমীক্ষা বলছে, লকডাউন, পরিবহণ খরচের লাগামছাড়া বৃদ্ধি আর খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ার কারণেই গোটা ২০২১ এবং ২০২২ বিশ্ব জুড়েই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকবে। চিনের মতো বেশ কয়েকটি দেশের খাদ্যপণ্য প্রয়োজনের থেকে বেশি মজুত করে রাখাকেও এই দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়েছে।
ভারতে মূল্যবৃদ্ধির হারকে লক্ষ্যে রেখে সুদের হার ঠিক করে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এখনও পর্যন্ত ৬ শতাংশের মধ্যে থাকলে সুদের হার না বাড়ানোরই সিদ্ধান্তে অটল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। তার উপর ডলারের অনুপাতে টাকার দাম পড়া অব্যাহত। বিশ্ব বাজারে পেট্রোপণ্যের দাম যা বাড়ছে, টাকা দুর্বল হওয়া তা কেনার খরচও বাড়ছে অনেক বেশি। তাতে পরিবহণের খরচ আরও বাড়বে আইএমএফ-এর সমীক্ষার মতে। বাড়বে খাদ্যপণ্যের দামও।
আগামীতে খাদ্যপণ্যের দামই যদি লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে নীতি নির্ধারকরা কী করেন এখন তাই দেখার অপেক্ষা।