প্রতীকী ছবি।
কোভিড আর মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার সাধারণ রোজগেরে মানুষ চাইছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে আয়ে করের হার কমাক কেন্দ্র। রবিবার সরকারি সূত্রের দাবি, এ বার সেই পদক্ষেপ করার কথাই ভাবছে অর্থ মন্ত্রক। শীঘ্রই বর্তমানে চালু বিকল্প আয়কর ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বসবে তারা। পাশাপাশি পুরনো করছাড় যুক্ত আয়কর ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হতে পারে।
এখন বিকল্প আয়কর ব্যবস্থায় প্রায় কোনও ছাড়ই মেলে না। করের হারও কম। তবে সকলের যে তাতে খুব লাভ হয় তা নয়। কিন্তু করদাতা এখন হিসাব করে দেখার সুযোগ পান কোনও নিয়মে কর দিলে লাভ হবে— ছাড় নিয়ে বেশি দিলে, নাকি ছাড় না নিয়ে কম দিলে। সূত্রের ইঙ্গিত, পছন্দের সুযোগটাই আগামী দিনে আর থাকবে না। কারণ, সরকারের লক্ষ্য ধাপে ধাপে এমন একটি কর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেখানে পুরনো নিয়মে থাকা কোনও ছাড় আর পাওয়া যাবে না। তার বদলে কম কর দিতে হবে। সব মিলিয়ে আরও সরল হবে কর কাঠামো। যদিও কর বিশেষজ্ঞদের মতে, ছাড়যুক্ত ব্যবস্থার তুলনায় ছাড়বিহীন নিয়মটিতে এখনও বিভিন্ন স্তরে করের হার কম হলেও সেটি জনপ্রিয় হয়নি। হিসেব-নিকেশের পরে অনেকেই আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
২০২০-২১ সালের বাজেটে এই বিকল্প কর ব্যবস্থা এনেছিল কেন্দ্র। এতে ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। ২.৫-৫ লক্ষে কর ৫%, ৫-৭.৫ লক্ষে ১০%, ৭.৫-১০ লক্ষে ১৫%, ১০-১২.৫ লক্ষে ২০%, ১২.৫-১৫ লক্ষে ২৫% এবং ১৫ লক্ষের উপরে ৩০% হারে কর দিতে হয়। কর বিশেষজ্ঞ সমরজিৎ মিত্রের দাবি, এতে নাম লেখালে স্বল্প আয়ের মানুষের কিছু সুবিধা হয়। কিন্তু আয় বেশি হলে তেমন লাভ নেই। তাই কেন্দ্র এখন কর আরও কমানোর পদক্ষেপ করে এটিকে সকলের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে চাইছে। তবে কর বাঁচাতে ছাড় নেওয়ার সুযোগ পুরোপুরি উঠে গেলে দেশে সঞ্চয়ের প্রবণতা ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছে একাংশ।
সূত্রের খবর, করদাতাদের ছাড় নেওয়ার মতো কোনও প্রকল্পে লগ্নি না থাকলে বা গৃহঋণ এবং শিক্ষাঋণ শেষ হলে কিংবা তা না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থায় আগ্রহ দেখান। কিন্তু বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বারের এক কর্তার কথায়, পুরনো ব্যবস্থায় ৮০সি ধারায় পিপিএফ, পিএফ, জীবন বিমা, ইএলএসএসের মতো প্রকল্পে লগ্নি করে বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় মেলে। স্বাস্থ্য বিমা, গৃহঋণ, শিক্ষাঋণের মতো ক্ষেত্রে ছাড়ের সুবিধা নেওয়া যায়। ফলে বিশেষত চাকরিজীবী শ্রেণির জন্য সব সময় ছাড় ভাল। তাই বেশিরভাগই ছাড়বিহীন বিকল্প কর ব্যবস্থায় আসতে ততটা উৎসাহী হননি।