West Bengal Budget 2020

চা শিল্পে বরাদ্দ দুই

অমিতবাবুর দাবি, রাজ্যের চা শিল্প কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১৩
Share:

উত্তরবঙ্গে কর্মসংস্থানের অন্যতম প্রধান সূত্র চা শিল্প। কিন্তু আবহাওয়ার সমস্যা, বছর দুয়েক আগের রাজনৈতিক গোলমাল ইত্যাদির জেরে হালে কিছুটা বিপর্যস্ত তারা। এই অবস্থায় সোমবার আগামী অর্থবর্ষের বাজেট ঘোষণায় চা শিল্পের জন্য দু’টি প্রস্তাব এনেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। একটি নতুন। নাম চা সুন্দরী। বাগানের গৃহহীন শ্রমিকদের জন্য আবাসন প্রকল্প। অন্যটি গত দু’বছরের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী সম্প্রসারিত। বাগানকে কৃষি আয়করে আরও দু’বছরের জন্য সম্পূর্ণ ছাড়।

Advertisement

অমিতবাবুর দাবি, রাজ্যের চা শিল্প কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত। শিল্প সূত্রে খবর, বাগানের মুনাফার উপরে কৃষি আয়করের হিসেব কষা হয়। এর আগে ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ সালেও এক বছর করে ওই কর ছাড় দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ বার একসঙ্গে দু’বছরের (২০২০-২১ ও ২০২১-২২) জন্য ছাড় মিলল।

ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা, দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল কৌশিক বসু ও ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা-র প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তী, সকলেই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ক্ষুদ্র চাষি ছাড়া অধিকাংশ বড় বাগানেরই এতে তেমন লাভ হবে না বলে দাবি শিল্পের। অরিজিৎবাবু ও কৌশিকবাবুর মতে, সিংহভাগ বড় বাগান লোকসানে চলছে। ফলে তাদের উপর কৃষি আয়কর বসে না। তবে বিজয়বাবু বলেন, ‘‘এতে প্রান্তিক চাষিরা উপকৃত হবেন। একসঙ্গে দু’বছরের ছাড় পাওয়ায় নগদ জোগান বৃদ্ধির আভাস নিয়ে আগাম দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারবেন।’’

Advertisement

হাতে দুই

• আগের দুই অর্থবর্ষে চা বাগানগুলিকে কৃষি আয়করে ছাড় দেয় রাজ্য
• মুনাফার উপর ওই করের হিসেব কষা হয়
• ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ সালেও তা মকুব হল
• গৃহহীন শ্রমিকদের আবাসন প্রকল্প, চা সুন্দরী আনা হল
• তিন বছরের মধ্যে ওই আবাসন গড়বে রাজ্য
• বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা

প্রভাব ও আশঙ্কা

• কৃষি ঋণে ছাড়ে বেশি সুবিধা হবে ক্ষুদ্র চাষিদের
• বেশির ভাগ বড় বাগানই লোকসানে চলে। তাদের লাভ হবে না
• যারা এই সুবিধা পাবে, তাদের নগদ জোগান
কিছুটা বাড়বে। যা নেই বলে বহু দিন ধরে অভিযোগ তুলছে একাংশ
• আবাসন প্রকল্প কার্যকর করা নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরির আশঙ্কা আছে

অন্য দিকে, বাজেট প্রতিক্রিয়ায় মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং জানিয়েছেন, ‘‘পাহাড়ের চা বাগান কর্মীদের প্রজাপাট্টা দেওয়ার দাবিও দীর্ঘ দিনের। চা সুন্দরী প্রকল্প সেই পথে প্রথম কদম।’’ যদিও শিল্পের একাংশ বলছে, জমি লিজে বাগান কর্তৃপক্ষকে দেয় রাজ্য। ফলে লিজের বদল না-করলে কাউকে সেখানে বাড়ি গড়ে তার মালিকানা দেওয়ার আইনি জটিলতা রয়েছে। পাশাপাশি চা আইন মাফিক সব শ্রমিকের জন্য আবাসন গড়ে দিয়েছে বাগান। ফলে গৃহহীন শ্রমিক কার্যত থাকার কথা নয়। অনেকের আশঙ্কা, এ ভাবে বাড়ির মালিকানা দিলে ভবিষ্যতে কেউ তা বাইরের কাউকে বেচে দিতে পারে। তাতে বাগানের সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে।

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা চা বলয়ের নেতা জন বার্লা অবশ্য রাজ্যকে দুষে বলেন, ‘‘তৃণমূল শুধু চা শ্রমিকদের শোষণই করেছে। লোকসভায় হারের পরে ওরা বুঝেছে চা শ্রমিকদের জন্য কিছু করতে হবে। না হলে হারতেই থাকবে। তাই এ সব বলছে। কিন্তু কার্যকর করবে না কিছুই। সবার আগে বন্ধ বাগান খোলা দরকার। তা নিয়ে রাজ্যের মাথাব্যথা নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement