ফেডারাল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। — ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধি মোকাবিলায় ধাপে ধাপে শুধু বৃদ্ধিই নয়, বরং আগামী দিনে দীর্ঘ সময় ধরে সুদকে উঁচু হারেই বেঁধে রাখার ইঙ্গিত দিলেন আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভের চেয়ার জেরোম পাওয়েল। সেই সঙ্গে স্পষ্ট জানালেন, চড়া সুদের জমানায় মানুষের দুর্ভোগের কথা তাঁরা জানেন। এতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ঢিমে হবে, হারাবে রোজগারও। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি কমাতে গেলে এ ছাড়া উপায় নেই। তাঁর এই হুঁশিয়ারির পরেই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখা গিয়েছে বিশ্ব জুড়ে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এমনিতেই মানুষ চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার। তার উপরে ফের সুদ বাড়লে বিশ্ব অর্থনীতির হাল আরও সঙ্গীন হবে। তবে অনেকের মতে, আমেরিকায় মন্দার পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখান থেকে লগ্নি ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে সরতে পারে। যা এখানের অর্থনীতিতে কাজে লাগবে।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বেসামাল হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। জিনিসের চড়া দাম রুখতে টানা সুদ বাড়াচ্ছে শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এখনও সে ভাবে যে তার ফল ফলেনি। এরই মধ্যে সুদ আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত আশঙ্কা উস্কে দিচ্ছে। বিশেষত জ্যাকসন হোলে ফেডের বার্ষিক আর্থিক সম্মেলনে পাওয়েল নিজেই যখন বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধি আগের থেকে কমলেও, তড়িঘড়ি সুদ নামিয়ে আনা অর্থনীতির পক্ষে ভাল হবে না।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, ফেড সুদ বাড়ালে ভারতের মতো দেশ থেকে লগ্নি আমেরিকার বন্ডের বাজারে চলে যেতে পারে। কিন্তু আবার আমেরিকার আর্থিক অবস্থা যে ক্রমশ মন্দার দিকে যাচ্ছে, পাওয়েলের বক্তব্যে সেই আশঙ্কা স্পষ্ট। এতে সে দেশে চাহিদা কমতে ও বেকারত্ব বাড়তে পারে বলেও জানাচ্ছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে আমেরিকা থেকে লগ্নি ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আসতে পারে।
পাওয়েলের বক্তব্যের বিরূপ প্রভাব সোমবার ভারতের শেয়ার বাজারে পড়বে বলে ধারণা মোতিলাল অসওয়ালের অন্যতম কর্তা সিদ্ধার্থ খেমকার। বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীরও মতে, আমেরিকায় সুদ আরও বাড়লে তাৎক্ষণিক প্রভাব ভারতে পড়বে। আর মন্দা হলে আঁচ পড়বে সারা বিশ্বেই। বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য বলছেন, এই সুদ বৃদ্ধি বাজারের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।