—প্রতীকী চিত্র।
অভিযোগ ছিল, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি (এমএসএমই) শিল্পের থেকে কেনা পণ্য-পরিষেবার দাম মেটাতে অনেক দেরি করছেন বহু ব্যবসায়ী ও সংস্থা। ফলে ছোট সংস্থাগুলির একাংশ ব্যবসা চালাতে প্রয়োজনীয় পুঁজির ঘাটতিতে ভুগছে। এর সুরাহা হিসেবেই ১ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়ম চালু করে কেন্দ্র। সে জন্য আয়কর আইনে নতুন ধারাও যোগ করে। যেখানে ক্রেতা সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রেতা ছোট সংস্থাকে দাম মেটানো বাধ্যতামূলক করা হয়। নিয়ম না মানলে রাখা হয় নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আয়কর ছাড়ে সুবিধা না পাওয়ার শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও। ওই নিয়মের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে গেলেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ব্যাপার মণ্ডলের (এফএআইবিএম) অভিযোগ, অল্প সময়ে দাম মেটানোর বাধ্যবাধকতায় বহু সাধারণ ব্যবসায়ী অসুবিধায় পড়ছেন। তার উপর যে ছোট সংস্থাগুলির স্বার্থে নিয়মটি চালু হয়েছে, তারাই সব থেকে বেশি বিপাকে পড়ছে। কারণ, বহু ব্যবসায়ী ছোট শিল্পকে বরাত দেওয়াই বন্ধ করছেন। ধাক্কা সামলাতে ক্ষতি হবে জেনেও ছোট- মাঝারি সংস্থাগুলির একাংশ ছাড়ছে এমএসএমই তকমা। ফলে কেন্দ্রের নিয়ম বদলে লাভ হচ্ছে না কারও।
ছোট সংস্থাগুলির দ্রুত দাম পাওয়া নিশ্চিত করতে ২০২৩-এর অর্থ বিলের মাধ্যমে আয়কর আইনের ৪৩বি ধারার সঙ্গে নতুন ‘এইচ’ ধারা যুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ ছোট সংস্থার সঙ্গে পণ্য-পরিষেবা কিনতে চুক্তি করলে ৪৫ দিনের মধ্যে দাম মেটাতে হবে। চুক্তি না থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে। নিয়ম না মানলে ওই দাম খাতে করা খরচে আয়কর ছাড় পাওয়ার দাবি জানাতে পারবেন না ক্রেতারা।
এফএআইবিএম-এর সভাপতি জয়েন্দ্র তান্নার দাবি, এই নিয়মের ফলে ছোট সংস্থাগুলির থেকে পণ্য কেনা কমাচ্ছেন বা বন্ধ করছেন ব্যবসায়ীরা। অন্য দিকে বিক্রি যাতে না কমে তার জন্য বহু ছোট সংস্থা এমএসএমই নথি ছাড়ছে। শুধু গুজরাতেই যার সংখ্যা ১৯০০। সারা দেশে তা অনেক বেশি। তাই সুপ্রিম কোর্টে আইন বাতিলের আর্জি জানানো হয়েছে। তান্না বলেন, “যেখানে সরবরাহকারী (এমএসএমই) ও ক্রেতা (সাধারণ ব্যবসায়ী বা সংস্থা) সুবিধা মতো দাম মেটানোর সময়সীমা (৪৫ দিনের বেশি) ঠিক করেন, সেখানে আইন এনে সব পক্ষকে অসুবিধায় ফেলা ঠিক নয়।’’ এফএআইবিএম-এর সওয়াল বড় সংস্থাগুলির জন্য এই নিয়ম থাকতে পারে, সাধারণ ব্যবসায়ীদের তার বাইরে রাখা হোক।
যে ভাবে নতুন আইনটি চালু করা হয়েছে, তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার্সের সভাপতি নারায়ণ জৈন। তিনি বলেন, আইনটি পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছি। দাম মেটাতে অন্তত আয়কর রিটার্ন জমার শেষ দিন পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া উচিত।