অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ফাইল ছবি
বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা সত্ত্বেও, ভারত ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে ফের দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আমেরিকায় বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং আইএমএফের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জানালেন, আগামী দিনেও দেশ নিজের গতিতেই এগিয়ে যাবে। একই অনুষ্ঠানে স্টেট ব্যাঙ্কের কর্ণধার দীনেশ খারাও ভারতের আর্থিক অবস্থার ভাল ছবিই তুলে ধরেছেন। বলেছেন, বিশ্বে মন্দা দেখা দিলেও এখানে ততটা প্রভাব পড়বে না।
সংশ্লিষ্ট মহল যদিও বলছে, যে সময়ে অর্থমন্ত্রী ও ব্যাঙ্ক-কর্তা আশার বাণী শোনাচ্ছেন, তখনই ক্ষুধা সূচকে পিছিয়ে ভারতের স্থান দাঁড়িয়েছে ১০৭-এ। বেকারত্বের হার প্রায় ৬.৫%। ডলারের সাপেক্ষে টাকার রেকর্ড পতনে বাড়ছে আমদানি খরচ। ফলে আশঙ্কা ঘাটতি মাথাচাড়া দেওয়ার। তা ছাড়া নির্মলা যতই অর্থনীতির উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরুন, সরকারি পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি, আমদানি-রফতানি থেকে শিল্পোৎপাদন— সবের হিসাবেই বাড়ছে অর্থনীতি ঘিরে চিন্তা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সারা বিশ্বে বাড়ছে জ্বালানি, খাদ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে টানা সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন দেশ। ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন, মূল্যবৃদ্ধির চাপ, বিশ্ব অর্থনীতি ঘিরে আশঙ্কা এবং পিছিয়ে পড়া দেশগুলির সমস্যার কথা মেনেছেন নির্মলাও। তা সত্ত্বেও তাঁর দাবি, ভারতের অর্থনীতি চলতি অর্থবর্ষে ৭% হারে বাড়বে। সরকারের সংস্কার এবং নীতিগত বিভিন্ন সিদ্ধান্তই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সেই প্রসঙ্গে করোনাকালে গত ২৫ মাস ধরে দেশের ৮০ কোটি মানুষকে নিখরচায় খাদ্যশস্য পৌঁছনোর কথা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। তুলে ধরেন মূল্যবৃদ্ধি যুঝতে কেন্দ্রের পদক্ষেপ। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, ক’দিন আগেই অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছিলেন, বিশ্বে অতিমারির মধ্যে যত মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে নেমেছে তার অধিকাংশই ভারতীয়। খাদ্য সঙ্কট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ফলে অর্থমন্ত্রীর দাবি বাস্তবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।