ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি মে মাসে নেমে এল গত তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে নীচে। সোনা ও অশোধিত তেল আমদানির খরচ কমার হাত ধরে এই ঘাটতি নেমে আসায় তা কেন্দ্রকে কিছুটা স্বস্তি দেবে। কিন্তু এই নিয়ে টানা ছ’মাস ধরে কমতে থাকা রফতানি এখনও অর্থনীতি নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার কারণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রসঙ্গত, ভারতের জাতীয় আয়ে ২০% অবদান রয়েছে রফতানির।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি মে মাসে নেমে এসেছে ১০৪০ কোটি ডলারে (৬৬,৫৬০ কোটি টাকা)। এই ঘাটতি তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। ২০১৪-র মে মাসে তা ছিল ১১২৩ কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাটতি নেমে আসার কারণ বিশ্ব জুড়েই পণ্য মূল্য কমে আসা। তার প্রভাবে সোনা আমদানির খরচ এপ্রিলের তুলনায় ২৩% কমে মে মাসে দাঁড়িয়েছে ২৪০ কোটি ডলারে, যদিও সোনা আমদানির পরিমাণ বেড়েছে ১০.৪৭%। পাশাপাশি, অশোধিত তেলের দাম কমায় তা আমদানির খরচ এক ধাক্কায় ৪১% কমে দাঁড়িয়েছে ৮৫০ কোটি ডলার। এ ক্ষেত্রেও এপ্রিলের তুলনায় আমদানি বেড়েছে ১৫%। সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি থাকায় এখনই দর তেমন বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ ভাবে মে মাসে আমদানি ১৬.৫২% কমে হয়েছে ৩২৭৫ কোটি ডলার বা ২,০৯,৬০০ কোটি টাকা।
তবে বাড়া তো দূরের কথা, সরাসরি কমতে থাকা রফতানি এখনও কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের মাথাব্যথার কারণ। মে মাসে রফতানি ২০.১৯% কমে ছুঁয়েছে ২২৩৫ কোটি ডলার বা ১,৪৩,০৪০ কোটি টাকা। এর জন্য বিশ্ব বাজারে, মূলত ইউরোপ-আমেরিকায় চাহিদা কম থাকাকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সরকারি পরিসংখ্যানে। একইসঙ্গে অশোধিত তেলের দাম কমায় কমেছে পেট্রোপণ্যের রফতানি-মূল্য। তা ছাড়া রত্নালঙ্কার, ইঞ্জিনিয়ারিং ও রাসায়নিক দ্রব্যের রফতানিও মে মাসে কমেছে। এপ্রিলে তা কমেছিল ১৪%।
তলানিতে থাকা রফতানি নিয়ে এ দিনও উদ্বেগ জানিয়েছেন রফতানিকারীদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন্সের প্রেসিডেন্ট এস সি রলহান। তিনি বলেন, ‘‘টানা কমতে থাকা রফতানি অত্যন্ত চিন্তার বিষয়, বিশেষ করে তা যখন আরও বেশি হারে কমেছে।’’ এ ব্যাপারে তিনি কেন্দ্রকে দ্রুত জরুরি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তাঁর মতে, রফতানি এ ভাবে কমতে থাকলে আর্থিক বৃদ্ধিই মার খাবে।