Economy

সম্পদ বাড়াতে ব্যর্থ, তির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দিকে

সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারি হাতে দিয়ে দায় এড়াতে চাইছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত ছ’বছরে সম্পদ বাড়ানো দূরের কথা, সব থেকে বেশি ক্ষয় হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে। এমনই দাবি করেছেন মিউচুয়াল ফান্ড শিল্পের বিভিন্ন কর্তা। তাঁদের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মাথায় খোদ সরকারের হাত থাকা সত্ত্বেও এবং সেই কারণে বহু ক্ষেত্রে তারা ব্যবসায় বাড়তি সুবিধা পেলেও, নিজেদের সম্পদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেকেই চূড়ান্ত ব্যর্থ। ফলে ফের উঠেছে প্রশ্ন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে এমন চূড়ান্ত অদক্ষতাকে সরকার প্রশ্রয় দিল কী করে? সংশ্লিষ্ট সংস্থা, কর্মী ও সর্বোপরি দেশের স্বার্থে সেই ত্রুটি শুধরে নেওয়ার পরিকল্পনায় অনেক আগেই নজর দেওয়া উচিত ছিল না কি?

Advertisement

সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারি হাতে দিয়ে দায় এড়াতে চাইছে কেন্দ্র। অথচ সব ক্ষেত্রে সেটা না-করেও সেগুলির ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, যদি দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।

সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে দেশের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থার কর্তারা একবাক্যে বলেছেন, ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির একাংশের সম্পদ ক্ষয় হয়েছে। এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ডের সিইও নবনীত মুনতের দাবি, সম্পদের প্রসার সংক্রান্ত সূচক থেকে পরিষ্কার, নির্দিষ্ট সময়ে দেশের কয়েকটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সম্পদ যেখানে পাঁচ গুণ বেড়েছে, সেখানে ওই সময়ে বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ক্ষেত্রে তা দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় একই জায়গায়। যদিও সেগুলির নাম খোলসা করেননি তিনি।
তবে এই প্রসঙ্গে কোটাক মিউচুয়াল ফান্ডের এমডি-সিইও তথা প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির আংশিক সময়ের সদস্য নীলেশ শাহ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা এমটিএনএলের উদাহরণ টেনেছেন। যে সংস্থা অপর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএলের সঙ্গে মিশছে। তিনি বলেছেন, এক সময়ে এমটিএনএলের বাজারে থাকা শেয়ারের মোট মূল্য ছিল (মার্কেট ক্যাপিটাল) রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের থেকেও বেশি। এখন রিলায়্যান্সের মার্কেট ক্যাপ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার থেকে বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার প্রশ্ন, বেসরকারি টেলি সংস্থাগুলি যখন ৫-জি পরিষেবা দেওয়ার কথা ভাবছে, তখন ৪-জিতেই বিএসএনএলের হাতেখড়ি হল না কেন? অথচ সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, টেলিকম শিল্পে তাদেরই ধার সব থেকে কম। তাঁর বক্তব্য, সংস্থাকে এ ভাবে চালানো কি প্রতিযোগিতার উল্টো পথে হেঁটে তাদের ঠুঁটো করে রাখা নয়!

Advertisement

সরকার যদিও বরাবর যুক্তি দিয়ে আসছে, তাদের কাজ ব্যবসা করা নয়। ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করা। সরকারের এই দাবি তুলে ধরেই ফান্ড কর্তাদের অন্য এক অংশের কটাক্ষ, তা হলে নাগাড়ে বিলগ্নিকরণ কর্মসূচি ঘোষণা করা সত্ত্বেও বাস্তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সিংহভাগ অংশীদারি এখনও কেন্দ্রেরই হাতে কেন? কিছুটা ব্যতিক্রম শুধু ব্যাঙ্ক। ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটনের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার আনন্দ রাধাকৃষ্ণন বলেন, ‘‘এখন কেন্দ্রের মুখের সামনে আয়না ধরার সময় এসেছে।’’ তাঁর বক্তব্য, উপযুক্ত সংস্কার হলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি থেকে শেয়ারহোল্ডার ও কেন্দ্র, দু’পক্ষই লাভবান হতে পারত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement