প্রতীকী চিত্র।
অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ইতিবাচক বার্তা দিতে শুরু করলেও মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। এই অবস্থায় আগামী দু’মাসের ঋণনীতি ঠিক করতে সোমবার থেকে তিন দিনের বৈঠকে বসেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট কমিটি। বুধবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা হওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, খাতায়-কলমে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামালেও বাজারে তার প্রতিফলন বিশেষ হয়নি। এই অবস্থায় তাতে লাগাম পরাতে কি সুদ বাড়াবে ঋণনীতি কমিটি? নাকি অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন বাজারে নগদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে এ বারেও সেই পথে হাঁটবে না তারা? বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, আপাতত নগদের জোগানের পথে বিঘ্ন ঘটানো উচিত হবে না শীর্ষ ব্যাঙ্কের।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রেপো রেট (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে শীর্ষ ব্যাঙ্ক যে সুদে স্বল্পমেয়াদি ঋণ দেয়) ২৫০ বেসিস পয়েন্ট কমেছিল। শেষ বার তা বদলেছিল গত বছর ২২ মে। গত আটটি ঋণনীতিতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ অপরিবর্তিত রেখেছে। স্টেট ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সৌম্যকান্তি ঘোষের মতে, এ দফাতেও স্থিতাবস্থা বহাল রাখা উচিত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। তাঁর মতে, কোভিডের পরে অর্থনীতির চাকা সদ্য ঘুরতে শুরু করেছে। তাই আর্থিক ব্যবস্থায় নগদের জোগান আর না-বাড়ালেও, তা এখনই কমানোর পদক্ষেপ করা ঠিক হবে না।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক প্রধানত রেপো রেট এবং রিভার্স রেপো রেটের (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির থেকে যে সুদে শীর্ষ ব্যাঙ্ক স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয়) সুদের হার এবং নগদের জোগান নিয়ন্ত্রণ করে। এখন সেই হার যথাক্রমে ৪% এবং ৩.৩৫%। এ ছাড়াও রয়েছে আরও কয়েকটি রাস্তা। সৌম্যবাবুর মতে, রিভার্স রেপো রেট আপাতত একই রাখা উচিত। তাতে বাজারে নগদের জোগান বিঘ্নিত হবে না। কারণ, তা বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি তাদের অতিরিক্ত নগদ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাছেই জমা রাখতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে বেশি টাকা ঢুকবে। বাজারে কমবে নগদের জোগান।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন এবং পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র প্রামানিক এ ব্যাপারে একমত। তাঁদের দাবি, ‘‘করোনার পরে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মূল্যবৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণে। এ দিকে নতুন আশঙ্কা তৈরি করছে ওমিক্রন। এই অবস্থায় এমন কোনও পদক্ষেপ করা উচিত হবে না, যাতে নগদের জোগান কমতে পারে।’’