প্রতীকী ছবি
শুধু সন্দেহের বশে নয়, পণ্যের কাঁচামালে আগে মেটানো করের টাকা (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট বা আইটিসি) ফেরতের দাবি আটকাতে হলে হাতে যথেষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে। প্রমাণ ছাড়া যাতে কারও আবেদন নস্যাৎ করা না-হয়, সে ব্যাপারে জিএসটি অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছে পরোক্ষ কর পর্ষদ (সিবিআইসি)। কোন কোন ক্ষেত্রে দাবি আটকানো বৈধ গণ্য হবে তা জানিয়ে জারি করেছে নির্দেশিকা।
জিএসটি-র আওতায় বহু ব্যবসায়ী বেআইনি ভাবে আইটিসি ব্যবস্থার সুযোগ নিচ্ছে বলে বহু দিন ধরে ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠছে। সে জন্যেই কর দফতরের কিছু উচ্চপদস্থ অফিসারকে ভুয়ো দাবিগুলি আটকানোর বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল ২০১৯ সালে। তথ্য বলছে, গত মাসের শুরু পর্যন্ত ভুয়ো সন্দেহে ৬৬,০০০ ব্যবসার ১৪,০০০ কোটি টাকা আইটিসি আটকানো হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ী মহলের দাবি, এর জেরে বহু ন্যায্য পাওনাও মিলছে না। ফলে মূলধনে টান পড়েছে একাংশের। ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রে সব রকম আইন মেনে লেনদেন করা সত্ত্বেও স্রেফ সন্দেহের বশে আইটিসি আটকে দেওয়া হচ্ছে। ফলে টাকা ফেরত পেতে দেরি হচ্ছে। সময়ে পাওনা হাতে না-আসায় মূলধনের সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।’’
বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়েছে কর পর্ষদ। নির্দেশিকায় আইটিসি আটকাতে পাঁচটি কারণ বেঁধে দিয়েছে তারা। যেমন, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর কাছে ইনভয়েস (বিক্রির সময় পণ্যের দাম, পরিমাণ ইত্যাদির উল্লেখ থাকা নথি বা বিল) না-থাকলে বা ব্যবসায়ী এমন ইনভয়েসের ভিত্তিতে পণ্য কিনে থাকলে, যেখানে বিক্রেতা জিএসটি মেটাননি। পাঁচটি কারণের অন্তত একটি থাকলে টাকা ফেরতের দাবি আটকানো যাবে। বলা হয়েছে, মেটানো কর ফেরত নেওয়ার ছলে প্রতারণা করা হচ্ছে কি না, কর অফিসারদের তা বিচার করতে হবে প্রতিটি ঘটনা বুদ্ধি দিয়ে যাচাই করে। দেখতে হবে বিভিন্ন নথি। যথেষ্ট প্রমাণ পেলে আইটিসি আটকানো যাবে।
ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জিএসটি অফিসারদের ক্ষমতাও ভাগ করে দিয়েছে সিবিআইসি। কর ফেরতের টাকা ৫ কোটির বেশি হলে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রিন্সিপাল কমিশনার অথবা কমিশনাররা। ১ থেকে ৫ কোটি টাকার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিংবা যুগ্ম কমিশনাররা। ১ কোটির নীচে হলে ডেপুটি অথবা অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার পদের অফিসাররা। পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে সুশীলবাবু বলেন, ‘‘সন্দেহ হলেই আইটিসি আটকানোর নীতিতে অনেক ব্যবসায়ীই অকারণে হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন। আশা করছি, এই নির্দেশ সমস্যার সমাধান করবে।’’