পরিসংখ্যান বলছে, কাজের পরিমাণ এবং কর্মী সংখ্যার নিরিখে সারা দেশে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ১৮টি দফতরের মধ্যে দ্বিতীয় কলকাতা দফতর। অথচ আরবিআই কর্তৃপক্ষ এই দফতরের গুরুত্বই ক্রমশ কমিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ কর্মীদের। শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়ন অল ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষোভ, এই শহর থেকে কাজ অন্য রাজ্যে সরানো হচ্ছে। বন্ধ হয়েছে কলকাতায় পর্ষদের বৈঠক। কর্মী সংখ্যা তো কমছেই। কলকাতা দফতরকে অনেক পিছনে রাখা হচ্ছে নতুন নিয়োগেও। তাদের প্রশ্ন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হঠাৎ কেন এত ব্রাত্য হয়ে পড়েছে এই শহর? তার দোষ কোথায়?
এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির কলকাতা দফতরের চিফ জেনারেল ম্যানেজারকে মেল পাঠানো হলেও, কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। আরবিআই কর্তৃপক্ষের এই আচরণের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে ইউনিয়ন। তাদের আশঙ্কা, যা পরিস্থিতি তাতে শীঘ্রই কলকাতার দফতর দ্বিতীয় স্থানের মর্যাদা খোয়াবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীর ঘোষের অভিযোগ, ‘‘কয়েক বছর ধরেই অন্য অনেক রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় কম লোক নেওয়া হচ্ছে। কাজ কমায় নিয়োগও কমেছে। দফতরে ক্লার্ক কমতে কমতে এসে ঠেকেছে প্রায় ৩০০ জনে। এ বছর অবসর ও প্রমোশনের ফলে প্রায় ৫০টি ক্লার্কের পদ খালি হবে। অথচ নেওয়া হবে ১০ জনকে। যেখানে সারা দেশে নিয়োগ হবে ২৯৬ জন নতুন ক্লার্ক। কমছে অফিসারের সংখ্যাও।’’
সংগঠনের দাবি, গত ক’বছরে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কলকাতা দফতর থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগও সরানো হয়েছে। প্রথমে ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফসি) নজরদারির কেন্দ্রীয় বিভাগ। পরে সরানো হয় পূর্বাঞ্চলের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত বিদেশি মুদ্রার লেনদেন বিভাগ, কলকাতার ব্যাঙ্কগুলির উপরে নজরদারির বিভাগ, দেশে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্মীদের ভ্রমণ-ভাতা, ছুটি, গৃহঋণ-সহ নানা খাতে টাকা মেটানোর বিভাগও।
ক্ষুব্ধ ইউনিয়নের অভিযোগ, এক সময়ে প্রতি বছর আরবিআই পর্ষদের বৈঠক বসত এ শহরে। তা-ও বন্ধ। শেষ বার হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। কর্মীদের বার্তা, ‘‘এমন বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে বড় আন্দোলনে নামা হবে। কলকাতা দফতরের সামনে ধর্না-বিক্ষোভ শুরু করেছেন কর্মীরা।’’