প্রতীকী চিত্র।
পরিবহণের পরে রান্নাঘরেও তেলের ছ্যাঁকা লাগার সম্ভাবনা। শুধু দামবৃদ্ধিই নয়, ভোজ্য তেলের দাম লাগামছাড়া হয়ে যেতে পারে। কারণ, চলতি মাস থেকেই ভারতকে পাম তেল রফতানি বন্ধ করে দিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তেল রফতানিতে নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা। প্রসঙ্গত, ভারতে প্রয়োজনীয় পাম তেলের বড় অংশই ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে পদক্ষেপ করে সেই দাবিও তুলেছে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি।
বণিক সংগঠন সলফেন্ট এক্সট্র্যাকটর্স অ্যাসোসিয়েশনের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর বিভি মেটা বলেন, ‘‘ইউক্রেনে যুদ্ধ চলায় এমনিতেই সূর্যমুখী তেলের জোগান ধাক্কা খেয়েছে। এখন পাম তেলের জোগান কমে গেলে সার্বিক ভাবে দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার সিদ্ধান্ত ভারতের বাজারে বড় প্রভাব ফেলবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, ভারতে প্রতি মাসে ১৮ লাখ টন ভোজ্য তেল লাগে। এর মধ্যে ছয় থেকে সাত লাখ টন পাম তেল আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। মালয়েশিয়া, তাইল্যান্ড এবং পাপুয়া নিউ গিনি থেকে বাকিটা আসে। ফলে ইন্দোনেশিয়া থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে ভারতে। এই পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ভারত সরকারের কথা বলা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন মেটা।
মার্চের শেষেই আন্তর্জাতিক আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা ক্রিসিলের সমীক্ষায় দাবি করা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ভারতে অশোধিত সূর্যমুখী তেলের আমদানি চলতি অর্থবর্ষে ২৫ শতাংশ কমতে পারে। প্রয়োজনের এই তেলের ৯০ শতাংশই ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে কেনে ভারত। জোগানের ঘাটতি তার দামকে আরও ঠেলে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হয়।
ভারতে ভোজ্য তেলের মধ্যে সব থেকে বেশি ব্যবহৃত পাম তেলের দাম অবশ্য আগে থেকে অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। এর সঙ্গে সূর্যমুখী তেলের জোগান কমে যাওয়ায় ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা তৈরি হয়। এখন পাম তেলের অভাব সেই সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেবে।