ছবি: পিটিআই।
লোকসভা ভোটে বিজেপি দিল্লিতে সাতে সাত পেয়েছিল। আজ বিধানসভায় ৭০টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনের গণ্ডি পার হতে হিমশিম খেতে হল। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে দাবি করলেন, অর্থনীতির ঝিমুনি কাটার সাতটি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
দিল্লির গদিতে ৩০০-র বেশি আসনে জিতে ক্ষমতায় আসার পর নয় মাসের মধ্যেই খাস দিল্লিতে ফের ধাক্কা খেল বিজেপি। অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে আমজনতার সমস্যাও এর পিছনে কারণ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গরিব-নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বিদ্যুতের বিল থেকে জলের কর প্রায় তুলে অরবিন্দ কেজরীবাল আমজনতার সেই ক্ষতে প্রলেপ লাগিয়ে ভোট টেনেছেন বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আজ সংসদের দুই কক্ষেই বাজেট নিয়ে বক্তৃতায় দাবি করেছেন, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সাতটি লক্ষণ স্পষ্ট।
কী সেই লক্ষণ?
অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, এক, দেশে সরাসরি বিদেশি লগ্নির পরিমাণ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে। চলতি বছরে এপ্রিল থেকে নভেম্বরে ২৪.৪ বিলিয়ন ডলারের লগ্নি এসেছে। গত বছর এই সময়ে যা ছিল ২১.২ বিলিয়ন ডলার। দুই, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও দেশে লগ্নি বাড়াচ্ছে। পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজ চালু হলে আরও বেশি লগ্নি আসবে। তিন, টানা কয়েক মাস ধরে শিল্পোৎপাদন কমার পরে নভেম্বরে সামান্য হলেও বেড়েছে। চার, শিল্পে উৎপাদনের ইঙ্গিতবাহী বেসরকারি সূচকেও ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলছে। পাঁচ, বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার গত বছরের ৪১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৪৬৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ছয়, জিএসটি থেকে আয় জানুয়ারি মাসে ফের ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাপিয়ে গিয়েছে। সাত, শেয়ার সূচকও উঠছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের এটিএম আশ্বাসে লাভ দেখছে না চা-বাগান
বাজেট নিয়ে বিতর্কে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম থেকে শুরু করে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন, এখন অর্থনীতির সমস্যা বাজারে চাহিদা নেই। লগ্নিতে ভাটার টান। বেকারত্ব বাড়ছে। কিন্তু এই তিন সমস্যার সমাধানেই বাজেটে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কেন মোদী সরকার বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করছে না, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে আলোচনা করছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন চিদম্বরম।
আজ তাঁকে নির্মলার কটাক্ষ, যাঁরা ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ লাগামছাড়া অবস্থায় ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁদের থেকে সরকার কোনও পরামর্শ নেবে না। ইউপিএ জমানায় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গিয়ে এক দিকে ব্যাঙ্কের খাতায় লোকসানের অঙ্ক বেড়েছিল, কর্পোরেট সংস্থাগুলির খাতাতেও লোকসানের অঙ্ক বেড়েছিল। রাজস্ব ঘাটতি ও বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি দুইই বেড়েছিল। সেই ভুলের পুনারবৃত্তি মোদী সরকার করবে না।