দুশ্চিন্তা: মধ্য কলকাতায় এক গয়নার দোকানে। নিজস্ব চিত্র
ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতির ছায়া ঘনাল ধনতেরাসের বাজারেও।
কাল ধনতেরাস। কিন্তু এখনও জমেনি গয়নার বাজার। উচ্চবিত্তেরা যে সব দোকানে যান সেখানে কিছুটা বিক্রিবাটা হলেও, প্রায় মাছি তাড়ানোর অবস্থা ছোটগুলির। গয়না ব্যবসায়ীদের আশা, আজ ও কাল, এই দু’দিনে ক্রেতার ভিড় বাড়বে। যেমনটা শেষ দু’দিনে হয়ে থাকে বরাবর। তবে সিংহভাগ দোকানই নিশ্চিত, সব মিলিয়ে বিক্রি আগের বছরের থেকে কমতে পারে ৩০-৬০ শতাংশ।
ধনতেরাস উপলক্ষে সোনা কেনা শুভ— এই বিশ্বাসে ভর করে এ সময়টাতে সোনা কেনার চল মূলত দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে। তবে এখন তা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যত্রও। ফলে প্রতি বছরই ধনতেরাসের ১৫ দিন আগে থেকে গয়না কেনার হিড়িক পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিক্রি তুঙ্গে পৌঁছয় ধনতেরাসের দিন। তাই এই সময়ে ভাল ব্যবসার আশায় বুক বাঁধেন ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু এ বছর সেই ছবি অনেক ফিকে। বেলঘরিয়ায় গয়নার দোকান, পিসি পোদ্দার জুয়েলার্সের মালিক টগর পোদ্দার বলেন, ‘‘আমাদের মতো ছোট দোকানে কেনাকাটা খুব কম হচ্ছে। আশা করছি, আজ কিছুটা বাড়বে। তবে ব্যবসা আগের বারের থেকে অন্তত ৬০% কম হবে।’’ স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে-রও দাবি, ‘‘দুর্গা পুজোর বাজার ঝিমিয়ে ছিল। চোখ ছিল ধনতেরাসের দিকে। এ ক্ষেত্রেও সবে বুধবার থেকে ক্রেতারা দোকানে আসছেন।’’ নেমিচাঁদ বামালুয়া অ্যান্ড সন্সের বাছরাজ বামালুয়া বা অঞ্জলি জুয়েলার্সের অনর্ঘ চৌধুরীর মতো একাংশ ব্যবসা ভাল হওয়ার দাবি করছেন ঠিকই। তবে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, ‘‘অন্যান্য বার কেনাকাটা শুরু হয় লক্ষ্মী পুজোর পরেই। এ বার দেরি হয়েছে। বিক্রি ২০ শতাংশের মতো কমতে পারে।’’
এই অবস্থার জন্য দু’টি কারণকে দায়ী করেছেন গয়না ব্যবসায়ীরা। এক, সোনার দাম দ্রুত বাড়া। দুই, হাতে বাড়তি টাকার অভাব। ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দীনেশ খাবরা বলেন, ‘‘মানুষ গয়না কেনে জরুরি খরচ সারার পরে। হাতের বাড়তি নগদে। এখন তাতে টান পড়েছে। ফলে তৈরির মজুরিতে পুরো ছাড় দিয়েও ক্রেতা টানা যাচ্ছে না।’’