রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।
উপযুক্ত সংখ্যক কর্মীর অভাবে রেলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। এই অবস্থায় সম্প্রতি রাজ্যসভায় খোদ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পেশ করা তথ্যে ফের উঠে এসেছে শূন্য পদের খতিয়ান। যার সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি। নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত স্তরে নির্বাচিত হয়েছেন ১,৪৭,২৮০ জন। ফলে তার পরেও ফাঁকা থেকে যাবে বহু পদ। তার উপরে নন-গেজেটেড বিভাগে কর্মী লাগবে ৩.১২ লক্ষ। এই পরিসংখ্যানের সূত্রেই নতুন করে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছে কেন্দ্র। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে দীর্ঘ দিন কর্মীর অভাবে রেলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ধাক্কা খাচ্ছে ও ঝুঁকির মুখে পড়ছে যাত্রী সুরক্ষা, সেখানে এত দিন ধরে এতগুলি পদ খালি ফেলে রাখা হয়েছে কেন?
মন্ত্রী মেনেছেন, রেলের গ্রুপ-সি বিভাগে খালি পদ ২,৪৮,৮৯৫টি। এটি মূলত টেকনিক্যাল বা কারিগরি বিভাগ। এর মধ্যে মোট শূন্য পদের সংখ্যা সব থেকে বেশি উত্তর রেলে, ৩২,৪৬৮। তার পরে পূর্ব রেল, ফাঁকা ২৯,৮৬৯ পদ। পশ্চিম রেলে ২৫,৫৯৭টি ও রেলের সেন্ট্রাল বা মধ্য অঞ্চলে ২৫,২৮১টি। নন-গেজেটেড বিভাগে শূন্য পদের সংখ্যা মোট ৩.১২ লক্ষ। এখানেও কিছু নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজের দায়িত্ব নেওয়ার লোক নেই। আধিকারিক পর্যায়ের গ্রুপ-এ এবং বি শ্রেণিতে ২০৭০টি পদ খালি পড়ে বলেও দেখা গিয়েছে খতিয়ানে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১,৪৭,২৮০ জনকে চাকরির পরীক্ষার প্রেক্ষিতে নির্বাচন করা হয়েছে। ওই সব প্রার্থীর নাম তালিকাভুক্ত হয়ে আছে।
বস্তুত, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ উঠছে রেলে। সূত্রের দাবি, যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ থেকে আয় বাড়ছে ঠিকই। তবে একই সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন যন্ত্র খারাপ হওয়ার ঘটনা। এটাও কর্মী ঘাটতিরই পরিণতি বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের। তবে কর্তারা জানিয়েছেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে দেশে রেলের বিভিন্ন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বকেয়া না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে জন্য দেশ জুড়ে প্রায়ই বিভিন্ন সময়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে সেই কর্মকাণ্ড সারা হচ্ছে। তাতে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতাও ব্যাহত হচ্ছে।
সূত্রের খবর, অবস্থা এমন যে যাত্রী সুরক্ষার স্বার্থে বকেয়া রক্ষণাবেক্ষণ শেষ করতে টানা কাজ চলছে। তবে এতেও মানুষ ভুগছেন কর্মীর অভাবের দরুন। কারণ, ওই কাজ সময়ে শেষ করার ক্ষেত্রে সেই ঘাটতিই প্রধান বাধা, অভিযোগ রেলের কর্মী সংগঠনগুলির।