প্রতীকী ছবি।
খাদ্যশস্য ভরতে এ বার দেশে চটের বস্তার চাহিদা রেকর্ড ছুঁয়েছে। কিন্তু তা জোগানোর অবস্থায় নেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের চটকলগুলি। ফলে খরিফ-সহ আসন্ন রবি মরসুমের ঘাটতি মেটাতে শেষে প্লাস্টিকের বস্তা কেনার পথেই হাঁটতে হতে পারে কেন্দ্রকে। বিভিন্ন মহলের খবর, কমপক্ষে ৩-৪ লক্ষ বেল (১ বেল মানে ৫০০টি চটের বস্তা) প্লাস্টিকের বস্তা কিনতে বাধ্য হতে পারে বস্ত্র মন্ত্রক। সে ক্ষেত্রে বিপুল ব্যবসা হারাবে পশ্চিমবঙ্গ। কারণ মোট চটের বস্তার সিংহভাগই সরবরাহ করে এ রাজ্যের চটকলগুলি।
মন্ত্রকের হিসেব, রাজ্যগুলির যা চাহিদা তাতে এপ্রিলের মধ্যে অন্তত ১৯ লক্ষ বেল বস্তা লাগবে। অথচ চটকলগুলি পুরোদমে উৎপাদন করলেও, মাসে বড়জোর ৩ লক্ষ বেল তৈরি করতে পারে। ফলে সময়ে চাহিদা মতো বস্তা পাওয়া সম্ভব নয়, আশঙ্কা বস্ত্র মন্ত্রকের কর্তাদের। ঘাটতি পূরণে তখন ভরসা প্লাস্টিকের বস্তাই।
খাদ্যশস্য ভরতে চাহিদা মতো চটের বস্তা না-পেয়ে পঞ্জাব, তেলঙ্গানা আগেই জুট কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছে। না-পাওয়ার তালিকায় হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের মতো কৃষি প্রধান রাজ্য ছাড়াও আছে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই)। নাফেড বিভিন্ন তৈলবীজ কিনতে চটের বস্তা নেবে। তালিকায় আছে মহারাষ্ট্রও। বিভিন্ন রাজ্যের চাপে এখন খাদ্য মন্ত্রক ঘুরিয়ে বস্ত্র মন্ত্রককের কাছে জবাব চাইছে। দাবি উঠছে, দ্রুত প্লাস্টিকের বস্তা কেনা হোক, নইলে শস্য নষ্ট হবে। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপের আর্জিও উঠছে। সম্প্রতি চটকল মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে পশ্চিমবঙ্গে আসেন বস্ত্র মন্ত্রকের সচিব রবি কপূর। সরবরাহ বাড়ানোর আর্জি নিয়ে রাজ্যে আসেন পঞ্জাবের খাদ্যমন্ত্রী ভারতভূষণ আশুও। কিন্তু চটশিল্প কাউকে তেমন আশ্বস্ত করতে পারেনি।
জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী জানান, রবি মরসুমের ফলন ভাল হবে ধরে নিয়েই রেকর্ড বস্তা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তা মেটানোর মতো অবস্থায় নেই চটকলগুলি। তাঁর ইঙ্গিত, ঘাটতি পূরণে প্লাস্টিকের বস্তা কেনা হতে পারে। রাজ্যের চটকল মালিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জানুয়ারিতেই দেশে বস্তার চাহিদা রয়েছে ৪.৫ লক্ষ বেল। সব চটকল পুরোদমে উৎপাদন চালালেও ঘাটতি ১.৫ লক্ষ বেল।