লোকাল ট্রেনে ঝালমুড়ির স্বাদাই আলাদা। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন লোকাল হোক বা দূরপাল্লা, হকারের দেখা মেলেই। কী মেলে না ট্রেনে! সবজি থেকে ফল, সেফটিপিন থেকে গয়না, বাদাম ভাজা থেক রুটি-তরকারি সবই মেলে হকারদের থেকে। কোষ্ঠকাঠিন্য, গেঁটে ব্যথার টোটকা, তাবিজ থেকে সংসারের টুকিটাকি, বাচ্চার খেলনা, লক্ষ্মীর পাঁচালি, ইঁদুর মারর বিষ, খাতা-কলম-বই— যা চাইবেন তাই পাওয়ার জগতের আর এক নাম ট্রেনের বগি। হকারদের মাসকাবারি খদ্দেরও কম থাকে না। হকারির আবার ঋতু রয়েছে। গ্রীষ্মে ঠান্ডা পানীয়, বর্ষায় ছাতা, শীতে কান ঢাকা টুপি— সব মেলে। কিন্তু এই বিকিকিনি কতটা বৈধ? কী বলছে রেলের হকার সংক্রান্ত আইন?
শুরুতেই জেনে রাখা দরকার যে, ট্রেনে অথবা স্টেশনে, রেলের এলাকায় অননুমোদিত হকারদের বিক্রি দূরের কথা প্রবেশই বৈধ নয়। এ নিয়ে স্পষ্ট আইন রয়েছে ভারতীয় রেলের। সে নিয়ম কেন মানা হয় না, বা কী ভাবে অবৈধ কেনাবেচা মেনে নেওয়া হয়, সে বিতর্ক না গিয়ে বরং জানা যাক কী বলছে রেলের আইন কী বলছে। প্রথম কথা, রেলের অনুমোদন নিয়ে লাইসেন্স প্রাপ্ত হকাররাই রেল চত্বরে স্টল বসাতে পারেন।
খাবার থেকে ওষুধ। ট্রেন মানে সব পেয়েছির বাজার। নিজস্ব চিত্র
ট্রেনে হকারদের সামগ্রীর প্রচার বা ক্যানভাসিংয়ের বৈশিষ্টও আলাদা আলাদা। অনেক সময়ে তাঁরা বিখ্যাতও। কিন্তু এমন প্রচারও বৈধ নয়। ১৯৮৯ সালের রেলের আইনের ১৪৪ ধারা অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি ট্রেনে বা রেলের এলাকায় কোনও সামগ্রী বিক্রির জন্য প্রচার করেন, সেটাও আইনত অপরাধ। এর জন্য জেল, জরিমানা কিংবা দুই-ই হতে পারে। জরিমানার পরিমাণ হতে পারে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত। আর কারাবাসের সাজা হতে পারে এক বছর পর্যন্ত।
রেলের পক্ষ থেকে অনেক সময় হকারদের সাজা দেওয়ার জন্য ধরপাকড়ও করা হয়। তবে সেটা কোনও নির্দিষ্ট উৎপাতের অভিযোগ এলে। তবে সাধারণ ভাবে আইন মেনেই ট্রেনে বা রেল চত্বরে হকারদের দেখা গেলে রেলের নিরাপত্তা রক্ষীরা সরিয়ে দেন। রেল যে এটা করতে পারে, তাও আইনেই বলা রয়েছে। তবে ট্রেনে ও রেল চত্বর যে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা, সেটা মাথায় রেখেই সাধারণভাবে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয় না বলেই বক্তব্য রেলের। রেলকর্তাদের বক্তব্য, যতক্ষণ না রেলের বা যাত্রীদের কাছে বিষয়টা সমস্যার হয়ে দাঁড়াচ্ছে, ততক্ষণ কোনও পদক্ষেপ করা হয় না।