কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। —ফাইল চিত্র।
আর জি কর কাণ্ডে তোলপাড়ের মধ্যে কলকাতায় এসে প্রত্যাশিত ভাবেই এ ব্যাপারে রাজ্যের সমালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। আর সেই সূত্র ধরে মনে করিয়ে দিলেন, শিল্পে লগ্নি পাওয়ার দিক থেকেও আইন-শৃঙ্খলা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
মঙ্গলবার বণিকসভা সিআইআইয়ের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন মোদী সরকারের শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যার কথা উল্লেখ করেন তিনি। জানান, এ রাজ্যে শিল্প স্থাপনের পথে এই বিষয়টি এখনও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁর কথায়, “এটা সত্যি যে, এখানকার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির আরও উন্নত হওয়া প্রয়োজন। আমার আশা, রাজ্য সরকার বিনিয়োগ টানতে এবং রাজ্যের যুবসম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে একে গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।”
প্রসঙ্গত, বাংলায় শিল্প তৈরির পথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সমস্যা নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, আরও নানা কারণের সঙ্গে এই শর্তটি পালন করতে না পারা এ রাজ্যের সঙ্গে লগ্নির যোজন দূরত্ব তৈরি করছে। স্থানীয় স্তরে নেতাদের দাদাগিরি, তোলাবাজি কিংবা জোরজুলুম নিয়ে বারবার রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের কাছে নালিশ জানানোর পরেও কাজ হয় না বলে একাধিক দফায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিল্পকর্তাদের একাংশ। এ দিন কার্যত সেই সুরই ফের শোনা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গলায়। আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে যা ইঙ্গিতবাহী এবং তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বাণিজ্যমহলের অনেকে।
একই সঙ্গে প্রধান এ দিন পূর্ব-ভারতের বাণিজ্য ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে আসার ব্যাপারেও জোর দেন। বলেন, “(পশ্চিমবঙ্গ-সহ) সমগ্র পূর্বাঞ্চল ক্রমশই ব্যবসা-বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়ছে। সারা ভারতের মোট রফতানির মাত্র ৬.৮ শতাংশ হয় এই এলাকা থেকে। অথচ খনিজ সম্পদে দেশের এই অংশ সবচেয়ে এগিয়ে। তার পরেও রফতানি শিল্পের এমন হাল।” তিনি আশা প্রকাশ করে মন্তব্য করেন, দিল্লির সরকার এই পরিস্থিতি বদলাতেই ‘পূর্বোদয়’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যাতে এখানকার বাণিজ্যের ছবিটা বদলে যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের অবাধ বাণিজ্য চুক্তির সুবিধা কী করে পূর্ব-ভারত পেতে পারে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবক’টি রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন প্রধান। পাশাপাশি, তাঁর বক্তব্য, লগ্নি টানার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির মধ্যে যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চলে, তা আখেরে দেশকেই উপকৃত করছে।