ভাল নেই ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থাগুলি।
পুরনো পাঁচশো, হাজারের নোট বাতিলের জেরে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হারাচ্ছে ক্ষুদ্র-ঋণপ্রদানকারীরা। দাবি, এই সব সংস্থার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মাইক্রো ফিনান্স ইনস্টিটিউট (অ্যামফি)-এর।
পশ্চিমবঙ্গে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩২টি ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থা মাসে গড়ে ৪,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে। অ্যামফি-র পরিসংখ্যান বলছে, ৮ নভেম্বরের পরের এক মাসে তা কমে হয়েছে ২,৫০০ কোটি টাকা। সংগঠনের চেয়ারম্যান অজিত মাইতি বলেন ‘‘দিনে অন্তত ৫০ কোটি টাকা মার খাচ্ছে এ রাজ্যের ক্ষুদ্র-ঋণ কারবার।’’
যার কারণ হিসেবে অজিতবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এক দিকে, ঋণগ্রহীতারা অনুমোদিত ঋণের অর্থ হাতে পেতে অসুবিধায় পড়ছেন। যেটা হচ্ছে টাকা তোলায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ঊর্ধ্বসীমার দরুন। ফলে ব্যবসায় প্রয়োজনীয় পুঁজির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, নতুন নোটের অভাবে আগে নেওয়া ঋণ ও তার সুদ শোধ করতে পারছেন না গ্রাহক।’’ সব মিলিয়ে যা আঘাত হানছে সংস্থাগুলির ব্যবসায়।
উল্লেখ্য, রাজ্যে অ্যামফি-র সদস্য ক্ষুদ্র-ঋণ সংস্থাগুলি বছরে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা ধার দেয়। ঋণ যাঁরা নেন, তাঁদের সিংহভাগই সব্জি বিক্রেতা থেকে শুরু করে মনিহারি দোকান, পান-সিগারেট, সাইকেল সারাইয়ের দোকানের মালিক, মৎস্যজীবী বা গ্রামীণ কুটির শিল্পের উদ্যোগী।
শুধু অজিতবাবু নন, টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া এবং বাজারে নতুন নোটের যথেষ্ট জোগান না-থাকার প্রভাব ক্ষুদ্র-ঋণ ও সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের উপর গভীর ভাবে পড়ছে বলে অভিযোগ পূর্বতন যোজনা কমিশনের সদস্য কপিল মণ্ডলেরও। রাজ্যে সঞ্চয় ভিত্তিক ক্ষুদ্র-ঋণ প্রকল্প সংক্রান্ত এই বিশেষজ্ঞের দাবি, ‘‘ছোট উদ্যোগীরা না-পারছেন সঞ্চয় করতে, না-পারছেন নিয়মিত ঋণ শোধ করতে। ফলে, ভেঙে পড়ছে ক্ষুদ্র উদ্যোগের আর্থিক কাঠামো।’’ তবে একই সঙ্গে কপিলবাবুর আশা, নতুন বছরের শুরু থেকে পুরো পরিস্থিতি অনেকটাই ইতিবাচক হবে।